পঞ্চায়েত নির্বাচনে আহতদের দেখতে এসএসকেএম-এ গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালের বেডে গিয়ে আহতদের সঙ্গে দেখা করে আহতদের হাতে তুলে দেন আর্থিক সাহায্যের চেক। প্রত্যেকের শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজও নেন তিনি। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মখ্যমন্ত্রীকে পেয়ে কার্যত আপ্লুত হয়ে পড়েন আহতরা। নিজ নিজ এলাকার পরিস্থিতির কথাও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলেও ধরেন কেউ কেউ।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের দিন নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান,’ভোট-হিংসায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের সকলের পরিবারের জন্য আমি দুঃখিত, সমব্যথী। উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য পুলিশকে ফ্রি-হ্যান্ড দিচ্ছি। আমরা ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দিচ্ছি। ভোট-হিংসায় ১৯ জন মৃত। তাঁদের মধ্যে ১০ থেকে ১২ জন আমাদের দলের। ভোটের দিন মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। তার মধ্যেও ৪ জন আমাদের। বাকি ৩ জন অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মী বা সমর্থক। আর্থিক সাহায্যের ক্ষেত্রে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি কোনও ভেদাভেদ করা হবে না।’ সঙ্গে মমতার সংযোজন,’যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের জন্য আমরা দুঃখিত। মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। সঙ্গে দেওয়া হবে হোমগার্ডের চাকরিও।’
এদিকে এই বিষয়ে সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে নবান্ন। তাতে বলা হয়,
১. নির্বাচনে হিংসার কারণে যা যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার সম্পূর্ণ হিসেব দিতে হবে।
২. আইন লঙ্ঘনকারী ও হিংসায় জড়িত থাকা সমস্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে এবং তদন্ত করতে হবে।
৩. দায়ের হওয়া সমস্ত এফআইআর-কে একত্রিত করতে হবে।
৪. সমস্ত আহত ব্যক্তির তালিকা তৈরি করতে হবে ও স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সঠিকভাবে সমন্বয় সাধন করে চলতে হবে।
৫. হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত যদি কেউ থেকে থাকেন, তাহলে তাঁর দ্রুত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. স্পর্শকাতর এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করতে হবে ও সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মোতায়েন, রুট মার্চ এবং মাইকিং-এর ব্যবস্থা করাতে হবে। এলাকায় কোনওরকম হিংসা হতে দেওয়া যাবে না।
৭. কেন্দ্রীয় বাহিনী যতদিন থাকবে, তাদের থাকার এবং রসদের সবরকম ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. আদালতে পেশ করা, তথা সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় দেখান সমস্ত ছবি ও ভিডিওর বিস্তারিত রিপোর্ট প্রস্তুত করতে হবে।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, দিন কয়েক আগে নির্বাচনে আহত দলীয় কর্মীদের দেখতে এসএসকেএম-এ গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিট ও উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। নন্দীগ্রামে আহত দলীয় কর্মী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন অভিষেক। তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন।