শুক্রবার একুশে জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভাঙড়ে হাঙররা গণ্ডগোল করেছে’। তারই প্রেক্ষিতে নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, ‘ভাঙড়বাসীকে যদি হাঙর বা এই ধরণের কোনও কথা বলেন তিনি, তাহলে তার তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি, নিন্দা করছি। ভাঙড়বাসী অত্যন্ত শান্ত, সরল প্রাণের মানুষ তাঁরা। তাঁরা দিন আনে দিন খায়, নিজেদের কাজ নিয়ে থাকেন।’
এরপরেই নওশাদের সংযোজন, ‘হ্যাঁ, ভাঙড়ে কিছু রাজনৈতিক কারবারী আছে, শাসকের কিছু হাঙর আছে, যারা বর্তমানে হায়নার রূপ ধারণ করেছে, যারা জলাজমিকে বুজিয়ে দিয়ে প্রাসাদ সমান বাড়ি করছে, বিক্রি করছে। ওই সমস্ত তৃণমূল কংগ্রেসের হাঙর আছে ভাঙড়ে, যাঁরা জমির দালালি করেন। ভাঙড়ে ওই সমস্ত তৃণমূলের হাঙররা আছে, যারা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে আত্মসাতের চেষ্টা করে। ভাঙড়ে কিছু সংখ্যক হাঙর আছে তৃণমূলের, যাঁরা লেদার কমপ্লেক্সকে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত করছে, তোলা তুলছে। ভাঙড়ে নতুন করে হাঙর দেওয়া হল, সওকত মোল্লার মতো হাঙর, সওকত মোল্লার মতো হায়নাকে দেওয়া হল, যারা ভাঙড়কে উত্তপ্ত করল। বাইরে থেকে লোকগুলি বন্দুক নিয়ে এসে শান্ত ভাঙড়বাসীকে আতঙ্কিত করে তুলল।’
এরই পাশাপাশি শুক্রবারের নির্বাচনে মৃতদের ২ লক্ষ করে টাকা ও হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁর সেই সিদ্ধান্তেরও তীব্র সমালোচনা করেন নওশাদ সিদ্দিকি। তিনি বলেন, ‘২ লক্ষ টাকা ও একটা হোমগার্ডের চাকরি দিয়ে দায়ভার ঘাড় থেকে নামিয়ে দেওয়া যায় না। তার বেতন কত, সেটাও আমরা জানি না। পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সন্ত্রাস হয়েছে, তার দায়ভার সর্বপ্রথম নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে, রাজ্যের শাসকদলকেও নিতে হবে।’
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসা নিয়ে এদিনে একুশের মঞ্চ থেকে মুখ খোলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘৭১ হাজার বুথে নির্বাচন হল। ৩টি জায়গায় গণ্ডগোল হল। একটা ভাঙড়, যেখানে ওই হাঙররা গণ্ডগোল করেছে। একটা ডোমকল, যেখানে আমার জিতিনি, আমরা হেরেছি, গণ্ডগোল করে জিতেছে। একটা গণ্ডগোল হয়েছিল ইসলামপুর বা চোপড়ায়। আর একজন মারা গিয়েছেন কোচবিহারে। আর ১৮ জন খুন হয়েছে তৃণমূলের।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকটা পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে দিচ্ছি ও একটা করে স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরি দিচ্ছি।’