রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট নির্বাচন পরবর্তী হিংসার ঘটনায় বাহিনীকেও আরও দশদিন রাখার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। তাতে সম্মতি জানালেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্রাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চও। এদিনের শুনানিতে সরকারি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ব্যাপারে কী করা হয়েছে রাজ্যের কাছে জানতে চান প্রধান বিচারপতি। প্রত্য়ুত্তরে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। সেটা হলফনামায় জানানোও হয়েছে।
পাশাপাশি এই সব ঘটনা কারা ঘটিয়েছে তাও জানতে চান প্রধান বিচারপতি। উত্তরে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) জানান, সব কিছু জানানো হয়েছে হলফনামায়।
এদিকে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রাজ্যের তরফ থেকে নিরন্তর অসহযোগিতা করা হয়েছে। সে ছবি এখনও বদলায়নি। এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপাতত আরও ১০ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে রাজ্যে। দফায় দফায় তাদের প্রত্যাহার করা হবে। শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, রাজ্য যাতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারে, আদালত সেই সুযোগ দিক। এখন রাজ্যের সব জেলায় পুলিশের সঙ্গে তারা নিরাপত্তা দেওয়ার কাজ করছে। কোথাও কোনও অভিযোগ আসেনি। এই সমস্ত জনস্বার্থ মামলাগুলি খারিজ করা উচিত ।
এদিকে বিজেপি শিবিরের আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল উল্লেখ করেন, একাধিক মামলা হয়েছে, সবাই হলফনামা দিচ্ছে। কিন্তু মামলার আসল বিষয় হারিয়ে যাচ্ছে। যাঁরা ঘর ছাড়া, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, গণনা আদৌ হয়েছে কিনা এই বিষয়গুলোর ওপর আরও গুরুত্ব দেওয়া দরকার। পাশাপাশি বিজেপির আইনজীবী গুরুকৃষ্ণ কুমারের অভিযোগ পুনর্নিবাচন হয়েছে মাত্র ০.১ শতাংশ বুথে। ভিডিও ফুটেজও ভাল করে খতিয়ে দেখা হয়নি। এদিকে দু’জন মহিলার শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না। এদিন হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন তাঁরা। সেক্ষেত্রে প্রধান ওই দুই মহিলাকে এসকর্ট করে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারপতি। একইসঙ্গে তাঁরা যাতে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে থাকতে পারেন, তা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয় পুলিশকে।
প্রসঙ্গত, এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে প্রথম থেকেই বিস্তর জলঘোলা হয়। আদালতের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। যদিও সেক্ষেত্রেও সমস্ত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। নির্বাচনে বিস্তর হিংসারও অভিযোগ ওঠে। সেক্ষেত্রে এবার এই সিদ্ধান্ত বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।