মণিপুর ইস্য়ুতে সোমবারও অচল সংসদ, মোদির বিবৃতি দাবি বিরোধীদের

রাজ্য রাজনীতিতে যাই হোক না কেন, মণিপুর ইস্যুতে দিল্লিতে একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখালেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিরোধী জোটের সাংসদরা। সোমবার সকাল থেকেই মণিপুর ইস্যুতে দিল্লিতে সংসদ ভবনের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিরোধী দলের সাংসদরা। বেঙ্গালুরুতে গঠিত ইন্ডিয়া জোটের শরিক অধিকাংশ দলের সাংসদরাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মণিপুর ইস্যুতে সংসদে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিবৃতি দিতে হবে, এই দাবিই এদিন তুলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিরোধী দলের সাংসদরা। এরই পাশাপাশি সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও বলেন, ‘মণিপুরে যে ঘটনা ঘটেছে, তার সঙ্গে তো অন্য কোনও কিছুরই তুলনা চলে না।’

এরই পাশাপাশি মণিপুর ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র আক্রমণ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদের বাদল অধিবেশনে তাঁর নেতৃত্বে  তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া হয়। সোমবার সংসদে গান্ধি মূর্তির পাদদেশে প্ল্যাকার্ড হাতে পৌঁছে যান দলের সাংসদরা। সেখানে দাঁড়িয়ে অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, মণিপুরে অবিলম্বে চালু করা হোক ইন্টারনেট পরিষেবা। এই প্রসঙ্গে অভিষেক এও প্রশ্ন তোলেন, ‘মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কেন চুপ? মণিপুর থেকে নজর ঘোরানোর জন্য এখন বাংলা, বিহার, রাজস্থানে নারী নির্যাতনের কথা তোলা হচ্ছে৷ বাংলায় তো তিন মাস ধরে ইন্টারনেট বন্ধ রাখতে হয় না। মণিপুরে কেন বন্ধ রাখতে হচ্ছে? যদি মণিপুরের অবস্থা বাংলার থেকে ভাল হয় তাহলে সেখানে ইন্টারনেট চালু করে দেওয়া হোক।’ এরপরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘১৫০০ কোটি টাকা দিয়ে নতুন সংসদ ভবন তৈরি করেছেন আপনি। অথচ বাংলার মানুষদের ১০০ দিনের কাজের টাকা বকেয়া রেখেছেন। আর সেই সংসদে দাঁড়িয়ে আপনি মণিপুর ইস্যুতে নিশ্চুপ?’ এরই রেশ ধরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যালেঞ্জ, ‘মণিপুর থেকে নজর ঘোরাতেই বাংলা, ছত্তিশগড়, রাজস্থান নিয়ে মন্তব্য করা হচ্ছে। আপনাকে জানিয়ে রাখি বাংলায় গত তিনমাস ধরে ইন্টারনেট পরিষেবা সচলই রয়েছে। ডবল ইঞ্জিন সরকারের যদি এতই মহিমা হয় তবে ক্ষমতা থাকলে মণিপুরে অবিলম্বে ইন্টারনেট চালু করুন।’

মণিপুরে প্রকাশ্যে দুই আদিবাসী মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানোর ভিডিয়ো থেকে শুরু করে বারবার অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যা নিয়ে সংসদে কেন্দ্রের থেকে জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে। এই নিয়ে আলোচনায় সায়ও দিয়েছে মোদি সরকার।

এদিকে বিরোধীদের পাল্টা এ দিন সংসদ ভবনের বাইরে পশ্চিমবঙ্গ এবং রাজস্থানের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি সাংসদরাও। শাসক দলের এই বিক্ষোভ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। মণিপুর থেকে মানুষের নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য শাসক দলের এই বিক্ষোভ বলে টুইট করেছেন তিনি। সঙ্গে লেখেন, ‘কপি ক্যাট’। আগে থেকে ইন্ডিয়া জোটের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা ছিল। সেটার দেখাদেখি শাসক দলের সাংসদরাও অবস্থান বিক্ষোভ করেন।  সব মিলিয়ে মণিপুর ইস্যুতে সোমবার অচলই রইল সংসদের বাদল অধিবেশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × four =