বর্ষা সেভাবে শুরু হতে না হতেই ঘুম কেড়েছে নিউ টাউনবাসীর। আতঙ্কের নাম সাপ। মাটির বাড়ি বা বনজঙ্গল নয়, মাথা তুলে দাঁড়ানো হাইরাইজ থেকে পাঁচতলা কো-অপারেটিভ সাপের তাণ্ডব সর্বত্র। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন বাসিন্দার সাপের কামড়ে মৃত্যু হওয়ায় আতঙ্ক যেন গ্রাস করেছে গোটা নিউ টাউনকে। অবস্থা এতটাই সঙ্গীন যে লোকে নিউ টাউনে ফ্ল্যাট কিনেও থাকতে আসবে কিনা সেই নিয়ে মতামত জানতে চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার দ্বারস্থ হতে দেখাও যাচ্ছে অনেককে।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সোলার লাইট স্ট্রিট থেকে ঝাঁ চকচকে মাখনের মতো মসৃণ রাস্তা, পরিকল্পনা করে সাজানো উপনগরী পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত হতে নেটপাড়ায় শুরু হয় কটাক্ষের পালা। এরপর সাপের তাণ্ডব শুরু হতে যেন অগ্নিতে ঘৃতাহুতি হল। সাজানো শহরের পাকা রাস্তায় সাইকেল- বে থেকে মেন রোড ঘুরে বেড়াচ্ছে চন্দ্রবোড়া, কেউটে, কালাচ। সাপের আতঙ্কে বাসিন্দারা নিজেরাই মজুত করছেন কার্বলিক অ্যাসিড থেকে অ্যান্টি ভেনাম।
এমন পরিস্থিতিতে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া নিউটাউন বাসিন্দাদের একটি গ্রুপে এক ব্যক্তি জানতে চান, ‘নিউটাউনে একটি ফ্ল্যাট কিনতে চাই। সাপের সমস্যা আছে ওখানে। কী করব অন্য জায়গায় নেব?’ ফোনেটিকে লেখা সে মেসেজ যেন নেটপাড়ায় তোলপাড় ফেলে দিল। পোস্টের নীচে কমেন্টের সুনামি। কেউ লিখলেন, ‘এখানে না অন্য কোথাও নিন।’ কেউ লিখলেন, ‘২০ বছর বাদে আসুন তখন সমস্যা কমে যাবে।’ কেউ কেউ আবার শুধুই মস্করার মুডে। বললেন, ‘এলন মাস্কের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। মঙ্গলে ফ্ল্যাট খুঁজে দেবে।’ কারও ভাবনা, ‘কদিন বাদেই নিউটাউনের নাম বদল হয়ে গিয়ে স্নেক টাউন হয়ে যাবে। শুধু সাপ থাকবে।’
তবে সাপ সমস্যায় জেরবার নিউ টাউনবাসীদের আশ্বস্ত করে জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি। সাপ নিয়ে ঘর করতে শিখছে নিউ টাউন। হচ্ছে নানা সচেতনতা শিবির। জরুরি নম্বরের তালিকায় নিউ টাউনের বাসিন্দারা জুড়ছেন স্নেক ক্যাচারদের নম্বরও।