কেন্দ্রীয় সহ সভাপতির পদ হাতছাড়া হওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্তরেও বিজেপির প্রকাশ করা তালিকায় নাম নেই দিলীপ ঘোষের। রাজ্য স্তরেও কোনও পদে নেই তিনি। ঠিক এমনভাবেই হঠাৎ-ই বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল দিলীপ ঘোষকে। হাসিমুখে সে সময় সেই দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন নবাগত সুকান্ত মজুমদারের হাতে। কারণ, পরিবর্তে দিলীপ ঘোষকে সেই সময় সর্বভারতীয় সহ সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে এবার সেই পদমর্যাদাও হারিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির এই নেতা আর তার বদলে মেলেনি কিছুই।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে দিলীপ ঘোষকে। কেন্দ্রীয় পদাধিকারীদের নতুন তালিকায় নাম রয়েছে অনুপম হাজরার। এই বিষয়টি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয় বঙ্গ রাজনীতিতে। রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়, তাহলে দলের অন্দরে ডানা ছাঁটা হল দিলীপ ঘোষের, নাকি দিলীপ ঘোষকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হবে কি না তা নিয়েই।
এই প্রেক্ষাপটে এবার দিলীপ ঘোষ ইস্যুতে তাঁর পাশে দাঁড়ালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর কথায়, ‘দিলীপ ঘোষ আমাদের নেতা ছিলেন, আছেন এবং আগামীদিনেও থাকবেন। উনি একজন সফল রাজ্য সভাপতি। ওঁর নেতৃত্বেই গতবার লোকসভা ভোটে ১৮টি আসন জিতেছিল বিজেপি। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় তিন থেকে বিধায়ক সংখ্যা ৭৭ হয়, সেই তালিকায় আমিও ছিলাম একজন।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তালিকায় কে পদে থাকবেন আর কে থাকবেন না, এটা সম্পূর্ণটাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত। রাহুল সিনহাও তো কেন্দ্রের কোনও পদে নেই। কিন্তু আমরা যখন কোনও বৈঠক করি, উনিও আমাদের সঙ্গেই থাকেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা ওঁর টিমে কাকে রাখবেন, না রাখবেন সেটা একান্তই দলীয় বিষয়, এখানে আমাদের কোনও মতামত দেওয়ার বিষয়ই থাকে না। তবে আগামী দিনেও তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করার যে লক্ষ্যে এগোচ্ছে বিজেপি সেখানে দিলীপ ঘোষকে সঙ্গে নিয়েই বঙ্গ বিজেপির লড়াই জারি থাকবে।’
প্রসঙ্গত, একুশের নির্বাচনের আগে তৃণমূলের একাধিক নেতাকর্মীর হুড়মুড় করে বিজেপি-তে যোগদান এবং বিজেপির পুরনো কর্মীদের ‘বসিয়ে দেওয়া’ নিয়ে বারবার সরব হতে দেখা গিয়েছিল দিলীপ ঘোষকে। একাধিক বার রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের কাজ নিয়ে তির্যক মন্তব্য করতেও দেখা যায় তাঁকে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফেও এসেছে সাবধানবাণী৷ কিন্তু, তারপরেও নিজের মতামত স্পষ্ট কথায় ব্যক্ত করেছেন সংবাদ মাধ্যমের সামনে। এখন প্রশ্ন একটাই, তাহলে কি শুভেন্দু-সুকান্তর প্রতিপত্তিতে বঙ্গ বিজেপিতে কী সত্যিই কোণঠাসা হয়ে গেলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ!