রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাত শেষ হওয়া তো দূর-অস্ত বরং আরও নানা ইস্যুতে এই সংঘাতের আবহ যেন নয়া রূপ নিচ্ছে প্রতিনিয়তই। উপাচার্য নিয়োগ, বন্দিমুক্তির তালিকা নিয়ে আগেই সংঘাত বেধেছিল। এবার পিসরুমের পর পিস ট্রেন চালানোর ভাবনা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের। বাংলার সবচেয়ে বড় শত্রু হিংসা ও দুর্নীতি। সেই কারণে পিস ট্রেন চালানোর ভাবনা। শিয়ালদহে প্রধানমন্ত্রীর ‘অমৃত ভারত স্টেশন’ প্রকল্পের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের কাছে আর্জি জানান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল আবেদন করেন, শিয়ালদহ থেকে জলপাইগুড়ি পর্যন্ত পিস ট্রেন চালুর।
শনিবার রাজ্যের পাঠানো বন্দিমুক্তির তালিকা সংক্রান্ত ফাইল নবান্নে ফেরত পাঠিয়ে দেন রাজ্যপাল বোস। কোন বন্দির মুক্তি কোন যুক্তিতে তার ব্যাখা চেয়ে ফাইল ফেরত পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল। ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবসের আগে ৭১ জন বন্দির মুক্তির সুপারিশ করেছিল রাজ্য। জেলে থাকা ১৬ জন বিদেশি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের প্রস্তাবও রয়েছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে সেই ফাইল অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় রাজভবনে। কিন্তু তা ফেরত পাঠিয়ে দেন রাজ্যপাল। সেই নিয়ে এক প্রস্থ বিতর্ক চলে।
তার আগে উপাচার্য নিয়োগ ঘিরেও রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে বিরোধ বাধে। শিক্ষা দফতরকে না জানিয়েই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। আর রাজ্যপাল কর্তৃক উপাচার্য নিয়োগ বৈধ নয় বলে দাবি করে রাজ্য। এমনকী তাদের বেতন কাটারও নির্দেশিকা দেওয়া হয়। যদিও, হাইকোর্টের সেই নির্দেশে তা আর ধোপে টিকেনি। এই পরিস্থিতিতে আবার পিস-ট্রেনের ভাবনা রাজ্যের সংঙ্গে রাজ্যপালের বিরোধ বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। রাজ্যপালের এই আর্জির পর মুখ খোলেন তৃণমূল মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার জানান, ‘রাজ্যপালের কাজ সরকারকে সাহায্য করা। কিন্তু উনি সাহায্যের পরিবর্তে বাগড়া দিচ্ছে। উনি পিস ট্রেনের কথা বলছেন ভাল কথা। তার মানে কি ধরে নিতে হবে একটি শান্তির ট্রেন আর গোটা দেশে যে ট্রেন চলে তা সব অশান্তির ট্রেন?’ প্রত্যুত্তরে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘দেশে কোনও জায়গায় রাজনীতিতে হিংসা নেই। ছিটেফোটা কিছুটা কেরলে দেখা যায়। কিন্তু এ রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেভাবে এতগুলি মানুষের প্রাণ গেল এর কোনও পরিবর্তনই নেই। রাজ্যপাল বারবার হিংসার কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রীর মতো রাজ্যপালও হিংসা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন।’