সাংসদ পদ ফিরল রাহুলের

অবশেষে সাংসদ পদ ফিরল রাহুল গান্ধির। ওয়েনাডের সাংসদ হিসাবে পুনর্বহাল করা হল রাহুল গান্ধিকে। সোমবার সকালেই লোকসভার সেক্রেটারিয়েটের তরফে রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সাংসদ পদ ফিরল রাহুলের। ফলে সোমবার থেকেই লোকসভার অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন রাহুল গান্ধি। এক কথায় সুপ্রিম কোর্টের পর সংসদেও বড় জয় রাহুল গান্ধির। এই সমস্যার সমাধান হতে এটাও স্পষ্ট ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন রাহুল। এদিকে সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কংগ্রেসের আনা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নেবেন রাহুল। কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৌয়ের বদলে রাহুল গান্ধিই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী পদবি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেই  মানহানির মামলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন রাহুল গান্ধী। তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মানহানি মামলা দায়ের করেন গুজরাটের বিজেপি সাংসদ পূর্ণেশ মোদী। ওই মামলায় চলতি বছরের মার্চ মাসে সুরাট দায়রা আদালত রাহুল গান্ধিকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং দুই বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেয়। সুরাট আদালতের রায়ের পরদিনই জনপ্রতিনিধি আইন অনুযায়ী, সাংসদ পদ খোয়ান রাহুল গান্ধি। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই প্রথমে গুজরাত হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন রাহুল।

এরপর গত শুক্রবার, ৪ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টের তরফে সুরাট আদালতের ওই সাজার রায়ের উপরে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এরপরই সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার পথ খুলে যায় রাহুল গান্ধির জন্য। সেই দিনই লোকসভার স্পিকারের সঙ্গে দেখা করে রাহুলের সাংসদ পদ ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। একইসঙ্গে লোকসভার সেক্রেটারিয়েটের কাছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কপি জমা দেওয়া হয়। এরপরই সোমবার সংসদের অধিবেশন শুরু হতেই, লোকসভার সেক্রেটারিয়েটের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ ফেরানোর কথা জানানো হয়।

রাহুলের কামব্যাকের পর তিনিই  যে অনাস্থা আলোচনায় ইন্ডিয়ো জোটের মুখ হতে চলেছেন, এমন জল্পনায় সিলমোহর দিল বিরোধী শিবির। আগামী ৮ অগাস্ট থেকে শুরু হচ্ছে লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনা। ১০ অগাস্ট পর্যন্ত চলবে আলোচনা। আর প্রথম দিনই ডিবেটে প্রথম সাংসদ হিসেবে অংশ নেবেন রাহুল গান্ধি। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে মঙ্গলবার প্রথম ভাষণ দেবেন তিনি।

ইন্ডিয়া জোটের মুখ নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। চর্চায় উঠে এসেছে একাধিক নেতা নেত্রীর নাম। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই চেয়ারপার্সন হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে সোনিয়া গান্ধীকে। ইন্ডিয়া জোটের যে কোঅর্ডিনেশন কমিটি গঠন করা হবে, সেখানে আহ্বায়ক করা হবে নীতিশ কুমারকে। বিষয়টি ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন জেডিইউ-এর নেতারা। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩১ অগাস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বর মুম্বইতে ডাকা ইন্ডিয়া জোটের তৃতীয় বৈঠকে এই দু’জনের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হতে পারে। সেখানে রাহুল গান্ধিকে মাথায় রেখেও তাঁর কাঁধেই গুরুত্ব দায়িত্ব তুলে দেওয়ার কথা ভাবছেন নেতারা, অন্তত এমনটাই খবর সূত্র মারফত। খুব স্বাভাবিক ভাবেই এরপর যে প্রশ্ন সামনে আসছে, তবে কি তাঁকেই ইন্ডিয়ো জোটের প্রধানমন্ত্রী মুখ করা হবে কি না তা নিয়েও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 3 =