আদালতে তোলার সময় অশালীন অঙ্গভঙ্গি যাদবপুর কাণ্ডে ধৃত এক ছাত্রের

যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতারবারোজন। সূত্রের খবর, পুলিশের নজরে রয়েছেন আরও একাধিক।চলছে তদন্তের কাজ। এদিকে এক ধৃতের মিডিয়াকে দেখে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করার ঘটনা সামনে আসতে প্রশ্ন উঠে গেল অভিযুক্তদের মানসিকতা নিয়ে। সূত্রে খবর, শনিবার ধৃত তিন ছাত্রকে আদালতে তোলার সময়, এক ছাত্র সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনেই ‘মধ্যমা’ও দেখান। তিনিও মেইন হস্টেলেরই আবাসিক। শুধু তাই নয়, আর এসবের মাঝেই হস্টেল আবাসিকদের সম্পর্কে অভব্য আচরণের অভিযোগ এনেচেন হস্টেল পাড়ার বাসিন্দারাও। কখনও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, কখনও মদের বোতল ছোড়া, কখনও মহিলাদের লক্ষ্য করে নোংরা কথার ছুড়ে দেওয়া হতো বলেও অভিযোগ করছেন তাঁরা।

প্রসঙ্গত,যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলের উল্টোদিকে রয়েছে পোদ্দারনগর এলাকা। সেখানকার বাসিন্দারাই একের পর এক অভিযোগ তুলেছেন হস্টেলের আবাসিকদের নিয়ে। হস্টেলের পিছনেই বাড়ি এক মহিলা বলেন, ‘মেয়েরা বাড়ির ছাদে উঠতে পারে না। নোংরা কথা বলে। হস্টেল থেকে মদের বোতল ছোড়ে।’ অভিযোগ, বাড়িতে ছেলে বা মেয়েকে নাম ধরে চিৎকার করে ডাকলে, হস্টেল থেকেও সেই নাম ধরে ডাকাডাকি করে। এই প্রসঙ্গে এলাকার লোকজন বলছেন, তাঁরাও একপ্রকার ‘র‌্যাগিং’য়েরই শিকার। হস্টেলের ছাদ থেকে এক মেয়েকে লক্ষ্য করে বোতল ছুড়েছিল বছর আটেক আগে। সেই মেয়ের বাবার অভিযোগ, ‘আমার মেয়েকে লক্ষ্য করে মদের বোতল ছুড়েছিল। একটুর জন্য মাথা বাঁচে ওর। এরপর আমি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠিও দিই। ওরা বলল দেখছে। এসেওছিল। পরে কোথায় কী! ক্লাবেও জানানো হয়েছিল। পরে ওরা বলল দুঃস্থ ছেলেরা থাকে। হস্টেল তুলে দিলে অসুবিধা। পরে আমরা বলি তাহলে অন্তত এখানে আলো, ক্যামেরা লাগান। কিন্তু কোথায় কী?’ হস্টেলের ঠিক উল্টোদিকে যাঁদের ঘর, দিনভর ঘরের জানলা বন্ধ করে বসে থাকেন বলে অভিযোগ। বাড়িতে কেউ এলেও মুখ পোড়ে ‘পড়শি’দের কার্যকলাপে। এর থেকে এটাও স্পষ্ট যে, প্রথমবর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় নাম জড়ানোর পরও তাঁর যে সামান্য হেলদোল নেই।

উল্লেখ্য, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পর থেকেই তোলপাড় রাজ্য। যাদবপুর ববিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও উঠে এসেছে র‌্যাগিংয়ের তত্ত্ব। ঘটনার তদন্তে নেমেছে লালবাজার।আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল ৯ জনকে। শুক্রবার গ্রেফতার করা হয় আরও তিন জনকে। মোট গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়াল ১২। এদিন গ্রেফতার করা হয়েছে শেখ নাসিম আক্তার, হিংমাশু কর্মকার, সত্যব্রত রায়কে। এরমধ্যে নাসিম যাদবপুরের প্রাক্তনী বলে জানা গিয়েছে। রসায়নে স্নাতকোত্তর পাশ আউট। অন্যদিকে হিমাংশুর পড়াশোনা গণিত নিয়ে। সেও প্রাক্তনী। সত্যব্রত রায়ের পড়াশোনা চলছে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে। বর্তমানে সে চতুর্থবর্ষের ছাত্র বলে জানা যাচ্ছে। এই সত্যব্রতই ঘটনার দিন ডিনকে ফোন করেছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ফোন করে মিথ্যা ঘটনার ন্যারেটিভ দিয়েছিল বলে জানতে পারা যাচ্ছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × five =