২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে নতুন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। নয়া ওয়ার্কিং কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন মোট ৩০ জন। এর মধ্যে পুরোনো নামের সংখ্যাই বেশি হলেও সামনে উঠে এসেছে সচিন পাইলট, শশী থারুর, অশোকরাও চভনদের মতো বেশ কয়েকটি নতুন নামও।
তবে ওয়ার্কিং কমিটিতে সবথেকে বড় বদল হল অশোক গেহলটের বাদ পড়া এবং সচিন পাইলটের জায়গা করে নেওয়া। রাজস্থানে এই দুই নেতার দ্বন্দ্ব, কোনও গোপন বিষয় নয়। এই বদলের মধ্য দিয়ে দলে অশোক গেহলটের গুরুত্ব কমিয়ে, পাইলটের গুরুত্ব বাড়ানো হল বলে মনে করা হচ্ছে। সচিন পাইলটের লাগাতার বাধা সত্ত্বেও, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদে রেখে রয়ে গিয়েছেন গেহলট। এই অবস্থায় দলে সচিনের গুরুত্ব বাড়িয়ে ভারসাম্য বজায় রাখার বার্তা দিল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এখানে একটা কথা বলতেই হয়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ছত্তিসগড়ের রায়পুরে কংগ্রেসের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে, কংগ্রেস জানিয়েছিল, নয়া ওয়ার্কিং কমিটি বা কার্যকরী সমিতি গঠনের জন্য নির্বাচন করা হবে না। এরই বদলে দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে কার্যকরী সমিতির সদস্যদের বেছে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। রায়পুর অধিবেশনে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে কংগ্রেসের দলীয় সংবিধান সংশোধন করা হয়েছিল। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে তপসিলি জাতি-উপজাতি, ওবিসি, সংখ্যালঘু, মহিলা, এবং যুবকদের জন্য ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত মেনেই নয়া কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ওয়ার্কিং কমিটিতে নতুন যে মুখ সামনে এসেছে তাতে পাইলট, থারুর এবং চভন ছাড়া, ওয়ার্কিং কমিটিতে নতুন মুখ হিসেবে জায়গা পেয়েছেন চরণজিৎ সিং চান্নি, এন রঘুবীরা রেড্ডি, তাম্রধ্বজ সাহু, এবং দীপক বাবারিয়া। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের ওয়ার্কিং কমিটিতে বাংলা থেকে নতুন মুখ দীপা দাশমুন্সিও। তাঁর মতোই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কংগ্রেস কার্যকরী সমিতিতে নতুন মুখ জগদীশ ঠাকুর, জিএ মির, মহেন্দ্রজিৎ সিং মালব্য, গৌরব গগৈ, সৈয়দ নাসের হুসেন এবং কমলেশ্বর প্যাটেল। এর আগে ওয়ার্কিং কমিটিতে স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে ছিলেন সলমন খুরশিদ। তাঁকেও নয়া ওয়ার্কিং কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে। বীরাপ্পা মইলি এবং মনীশ তিওয়ারিকে স্থায়ী আমন্তিরিত সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
প্রত্যাশা মতো নয়া ওয়ার্কিং কমিটিতেও জায়গা পেয়েছেন বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা কংগ্রেসের লোকসভা দলের নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। সঙ্গে রয়েছেন সোনিয়া, রাহুল, প্রিয়াঙ্কা অর্থাৎ গান্ধি পরিবারের তিনজনই। তৃণমূলের সমর্থনে বাংলা থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছেন অভিষেক মনু সিংভি। তাঁকেও ওয়ার্কিং কমিটিতে রেখে দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যেই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে এই রদবদল করা হল বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা ওয়ার্কিং কমিটিতে নয়া অক্সিজেন যোগ করার দাবি জানানো হয়েছিল।