রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ ইস্যুতে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত তুঙ্গে। তবে এবার রাজ্য সরকারের সুপারিশ না মেনে নিজে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করার কারণ সম্পর্কে মুখ খুলতে দেখা গেল রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে। এই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল তথা আচার্য জানান, তাঁর কাজ উপাচার্যদের নিয়োগ করার নয়, মনোনীত করার। স্থায়ী উপাচার্যদের নিয়োগ কেবলমাত্র ইউজিসি-র নিয়ম অনুযারী গঠিত সার্চ এবং সিলেকসান কমিটির দ্বারাই করা যায়। এই নিয়মই চালু রয়েছে। এরই রেশ টেনে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এও জানান, ‘রাজ্যের নিয়ম অনুসারে, রাজ্যপাল অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের নিয়োগ করেন। সেক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে হয়। রাজ্য সরকার সেই সমস্ত অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের নাম পাঠিয়েও দিয়েছে। কিন্তু আমি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সেই বিষয়ে খোঁজখবর নিই। যাঁদের নাম রাজ্যের তরফ থেকে পাঠানো হয়েছে আমি সেই সমস্ত ব্যক্তিদের বিষয়ে গোপনে খোঁজখবর নিই। তাঁদের মধ্যে কারও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। একজনের বিরুদ্ধে নিজের ছাত্রীকে হেনস্থার অভিযোগ রয়েছে। নিয়ম বলছে, উপাচার্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কয়েকটি মানদণ্ড পালন করা উচিত। আমি কোনও ব্যক্তিকে বেছে নেওয়ার আগে তাঁর যোগ্যতা, কতোটা উপযুক্ত, ইচ্ছা, একডেমিক যোগ্যতা, এবং আকাঙ্ক্ষা, এই বিষয়গুলি মাথায় রাখি। তাই মন্ত্রকের প্রস্তাবিত নামগুলি মেনে নিতে পারিনি।’
এই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল এও জানান, ‘পরামর্শ মানে সম্মতি নয়। অতএব, আমি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অধ্যাপকদের তালিকার মধ্য থেকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করেছি, তাঁদের যোগ্যতা এবং পছন্দের ভিত্তিতে। আর অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যদের প্রফেসর হতে হবে এমন কোনও শর্ত নেই। সেটাকেই কলকাতা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিল শিক্ষা দফতর। হাইকোর্ট স্পষ্টভাবে বলেছে যে, আচার্যের পদক্ষেপ সঠিক এবং বৈধ। এদিকে রাজ্য সরকার বলছে, আচার্য ক্ষমতা লঙ্ঘন করেছেন, এমন কথাও ঠিক নয়। এটা আইনত ঠিক নয়।’
প্রসঙ্গত, এই ইস্যুতে গত শুক্রবার থেকে নতুন করে উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। শিক্ষামন্ত্রী ও আচার্যের এসেছে প্রতিক্রিয়া-পালটা প্রতিক্রিয়া। শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মধ্যরাতে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিতে শোনা যায় রাজ্যপালকে। এরপর রাত ১২টার আগেই দুটি চিঠিও তিনি পাঠিয়েছেন। যার মধ্যে একটি গেছে নবান্নতে এবং অপরটি দিল্লিতে। যদিও এই চিঠিগুলিতে কী লেখা রয়েছে সেই বিষয়ে অবশ্য এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি।