পূর্বঘোষণা মতো বাংলার প্রাপ্য আদায়ে অক্টোবরের গোড়াতেই দিল্লির দরবারে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। এবার সেই কর্মসূচির চূড়ান্ত পরিকল্পনা ঠিক কী ভাবে হবে তা সামনে আনলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের যাঁরা দিল্লির সেই বিক্ষোভ অংশ নেবেন, তাঁদের সকলের কাছে পৌঁছে যাবে শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ। নির্দেশ অনুসারে যোগ দিতে হবে ১, ২ এবং ৩ অক্টোবরের কর্মসূচিতে। তৃণমূল সূত্রে খবর, ১ অক্টোবরই দলের সমস্ত সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের নেতাদের দিল্লি চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২ অক্টোবর, গান্ধিজির জন্মজয়ন্তীতে রয়েছে তৃণমূলের প্রধান কর্মসূচি। ওইদিন রাজঘাটে শ্রদ্ধা জানাবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কর্মসূচি হবে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকেও। সব গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে গান্ধিজির ছবি রেখে শ্রদ্ধা জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে। এরই পাশাপাশি দিল্লির কর্মসূচি স্ক্রিনে দেখানোর ব্যবস্থা হয়েছে। দিল্লিতে যে বাংলার প্রান্তিক এলাকার মানুষের ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা প্রাপ্তির জন্য প্রতিবাদ চলছে, সেটা আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরা হবে হবে তাঁদের কাছে। এছাড়া ধর্মতলায় গান্ধিমূর্তিতে মাল্যদান করে ধরনায় বসার ভাবনা রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের। এরপর ৩ অক্টোবর তৃণমূলের প্রতিবাদস্থল হতে চলেছে দিল্লির কৃষিভবন। যন্তরমন্তর থেকে পদযাত্রা করে কৃষিভবন পর্যন্ত যাবেন তৃণমূল নেতারা। থাকবেন সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের নেতারা, কাউন্সিলররা। তাঁরা রাজ্য থেকে সংগৃহীত ৫০ লক্ষ চিঠি নিয়ে যাবেন। যা বাংলার মানুষের আবেদনের চিহ্ন স্বরূপ কৃষিভবনে জমা দেওয়া হবে এদিকে এই কর্মসূচির অনুমতি মিলেছে দিল্লি পুলিশের তরফ থেকেও।
এদিকে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ৩ তারিখ কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। এছাড়া রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন এই তিনদিনব্যাপী কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের থাকার জন্য রামলীলা ময়দানে তাঁবু তৈরির অনুমতি চেয়ে দিল্লি পুলিশকে চিঠি লিখেছিলেন। এখনও তার অনুমোদন মেলেনি। ২৩ তারিখ পর্যন্ত অনুমতি না মিললে আদালতের দ্বারস্থ হবে তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলের ধারনা, এই কর্মসূচির ফলে তৃণমূল যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে নেমেছিল, তা যে অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে, তাদের বকেয়া দাবি আদায় করতেই যে শাসকদল দিল্লি পৌঁছে এত বড় কর্মসূচিতে নেমেছে, সেটা আবারও প্রমাণ হবে। তাতে বাংলার মানুষের মনে তৃণমূলের প্রতি আস্থা আছে আরও মজবুত হবে। চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে যা দলকে বাড়তি অক্সিজেন দেবে। একইসঙ্গে জাতীয় স্তরে চব্বিশের লড়াইয়ে এই কর্মসূচি কাজে লাগাতে পারবে তৃণমূল।