সন্তান জন্মের পর পরই মৃত্যু হয় এক তরুণীর। এই ঘটনায় ডাক্তারের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে নানা ভাবে হেনস্থার অভিযোগও সামনে এসেছে। তবে দিনের পর দিন পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠায়, ওই চিকিৎসক কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। শনিবার এই মামলারই শুনানি ছিল বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে। এরপরই হাইকোর্ট পুলিশকে নির্দেশ দেয় চিকিৎসকের হেনস্থা আটকাতে রাজ্য পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। পুলিশও আশ্বস্ত করেছে, এই চিকিৎসক যাতে কোনওভাবে আর নতুন করে সমস্যায় না পড়েন তা দেখা হবে। একইসঙ্গে ওই চিকিৎসকের দায়ের করা দু’টি অভিযোগের ভিত্তিতে এখনও অবধি দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চার্জশিটও জমা দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফ থেকে।
এদিকে সূত্রে খবর, সন্তানপ্রসবের পর ওই তরুণীর প্যানক্রিয়াসের জটিল সমস্যা ধরা পড়ে। এই রাজ্যের চিকিৎসায় কাজ না হওয়ায় দক্ষিণ ভারতে যান চিকিৎসার জন্য। তাতেও সুফল মেলেনি। এর কয়েকদিন পরই মৃত্যু হয় ওই তরুণীর। এই ঘটনায় তরুণীর পরিবারের রোষানলে পড়েন ওই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই চিকিৎসক আদালতে জানান, রোগীর মৃত্যু হলেও সেই তরুণীর পরিবার এখন কার্যত ছিঁড়ে খাচ্ছে বহরমপুরের চিকিৎসক দীপায়ন তরফদারকে। মামলাকারী চিকিৎসকের দাবি, থানায় বা সংশ্লিষ্ট জায়গায় কোনওরকম অভিযোগ জানায়নি তরুণীর পরিবার। অথচ অনবরত তাঁকে নাকাল করে যাচ্ছে। এরই পাশাপাশি ওই চিকিৎসকের আইনজীবী আর্যক দত্ত এবং আইনজীবী অরিন্দম দাস এদিন আদালতে জানান, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ওই তরুণীর সন্তানের জন্মের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও অপারেশন করেছিলেন। কিন্তু প্যানক্রিয়াসের সমস্যা একেবারেই আলাদা চিকিৎসার বিষয়। অথচ সেই রোগে মৃত্যুর জন্য মৃতের পরিবার চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। ৩০ লক্ষ টাকা দাবিও করা হয়। শুধু তাই নয়, তাঁর কাছে রোজই থ্রেট কল আসছে বলেও জানান ওই স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ।
শুধু চিকিৎসককেই হেনস্থা করা হচ্ছে এমন নয়, পরিবারের লোকজনও চরম সমস্যায় পড়ছেন। পরিবারের লোকজন রাস্তায় বের হলে কুকথা শুনতে হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও ওই চিকিৎসক সম্পর্কে নানারকম অসম্মানজনক কথাবার্তা প্রচার করা হচ্ছে। নিষ্কৃতি পেতে ওই চিকিৎসক ইতিমধ্যেই বহরমপুর থানায় দু’টি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারপরও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। ফলে এই সব ঘটনার জেরে চরম আতঙ্কে দিন কাটছে ওই চিকিৎসক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের।