এই মুহূর্তে চিকিৎসার জন্য বিদেশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরইমধ্যে শুক্রবার তাঁর বিদেশযাত্রা মামলার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। এদিনের এই শুনানিতে অভিষেক ও রুজিরার বিরুদ্ধে কোনও লুক আউট নোটিশ থাকলে তা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিমানবন্দরে আটকানো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশও করে শীর্ষ আদালত। তবে শুক্রবার শুনানিতে আদালত জানিয়েছে, বিদেশ যেতে হলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাতদিন আগে তদন্তকারী সংস্থার কাছে অনুমতির জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে তদন্তকারী সংস্থা।
এদিকেঅভিষেকের চিকিৎসার জন্য এই বিদেশ যাওয়ার পরই বারবার উঠে এসেছে একটাই প্রশ্ন, অভিষেক ইডির অনুমতি নিয়ে বিদেশে গিয়েছেন কি না তা নিয়ে। সঙ্গে এ প্রশ্নও ঘোরাফেরা করতে থাকে, অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনও লুকআউট নোটিস তদন্তকারীরা জারি করেছেন কি না তা নিয়েও। কারণ, এর আগে অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তাঁর আত্মীয়দের বিমানবন্দরে আটকানোর ঘটনা ঘটে। সেক্ষেত্রে অভিষেকের জন্য তদন্তকারীদের এরকম কোনও বিধিনিষেধ আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এদিন শুনানি চলাকালীন কপিল সিব্বল শুরুতেই বলেন, তদন্তকারী এজেন্সি আদালতে জানাক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও লুকআউট নোটিস আছে কি না। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ইডির আইনজীবী এসভি রাজু জানান, ২৬ জুলাই থেকে ২০ অগাস্ট চিকিৎসার জন্য অবধি বিদেশে যাওয়ার জন্য অভিষেক আবেদন জানান। অর্থাৎ ইডিকে জানিয়েই অভিষেক বিদেশে গিয়েছেন এদিন ইডির এই বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে যায়। তবে বিচারপতি সঞ্জয় কিসান কউল এদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ শুনিয়েছেন। তিনি জানতে চান, ইডি-র তরফ থেকে স্পষ্ট ভাবে জানতে চান অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনও লুক আউট নোটিস আছে কি না তা নিয়ে। কারণ, বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পাওয়ার পরও অভিষেকপত্নী রুজিরা বা অভিষেকে শ্যালিকাকে বিমানবন্দরে আটকাতে দেখা গেছে। এরপরই ইডি জানায়, বিদেশ যেতে হলে সাতদিন আগে আবেদন করতে হবে। তা খতিয়ে দেখে অনুমতি দেওয়া হবে। এরপরই আদালতের তরফ থেকে ইডিকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘এটা তো চালু পদ্ধতি। আপনারা আপত্তি করছেন কেন ?’ এরই প্রেক্ষিতেও এদিন ইডিকে ক্ষমা চাইতেও দেখা যায়। এরপরই বিচারপতি সঞ্জয় কিসান কউল নির্দেশ দেন, এক্ষেত্রে পিটিশনারকে বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে সাতদিন আগে আবেদন করতে হবে। একইসঙ্গে তাঁর পর্যবেক্ষণ, আবেদন করেই যদি যেতে হয় তাহলে লুকআউট নোটিসের ভূমিকা কী? আর এরই রেশ ধরে লুকআউট নোটিস প্রত্যাহারের কথাও বলেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, গত সোমবারও এই সংক্রন্ত মামলার শুনানির সময় শীর্ষ আদালত ইডিকে বলেছিল অভিষেককে আটকানো উচিত হবে না। একেই সঙ্গে অভিষেকের স্ত্রী নারুলাকে কেন বিদেশ যাত্রায় বাধা দেওয়া হয়েছিল, তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল ইডির কাছে। এদিন ইডিকে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। এদিকে সূত্রে খবর, গত ২৬ জুলাই চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন অভিষেক। হলফ নামায় তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বিদেশ সফরের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ইডিকে চিঠি দিয়েছিলেন। গত ১৫ জুলাই ওই চিঠি দিলেও ইডি কোনও জবাব দেয়নি।