যাদবপুরের ঘটনার পর এবার একে একে সামনে আসছে বিভিন্ন কলেজের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ব়্যাগিংয়ের ঘটনা।পাঁশকুড়ার এক কলেজ পড়ুয়া অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতার বিরুদ্ধে। অ্যান্টি র্যাগিং সেলে অভিযোগও জানানো হয়েছে এ ব্যাপারে। এদিকে এবার বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজেও র্যাগিং-এর অভিযোগ। অভিযোগের আঙুল সেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দিকেই। বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের এক পড়ুয়া জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গেও র্যাগিং হয়েছে। সঙ্গে এও জানিয়েছেন, হস্টেলের কিছু আবাসিক ও বহিরাগতরা মিলে এই অত্যাচার চালায়।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। থানাতেও জানিয়েছেন অভিযোগ।কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
ব়্যাগিং সম্পর্কে এও পড়ুয়া এও জানান, তিনি যখন প্রথম ভর্তি হন, তখন তাঁকে দিয়ে মদ আনানো হত, মদের গ্লাস ধোয়ানো হত। ইন্ট্রোর নামে অনেক রাত পর্যন্ত আটকে রাখা হত। খোঁচা দেওয়া হত, যৌন প্রবৃত্তি নিয়েও। এসব কথা অবশ্য কোভিড আবহের আগে। কোভিড আবহের পর যখন তিনি আবার হস্টেলে ফিরে আসেন, তখনও পরিস্থিতি বিশেষ বদলায়নি। উল্টে অভিযোগ তোলার জন্য তিনি ‘টার্গেট’ হয়ে গিয়েছিলেন। বলছেন, ‘বহিরাগতরা আবাসিকদের মদ, গাঁজা, ড্রাগস সাপ্লাই দিত। সেই কারণে ওই বহিরাগতদের হস্টেলে থাকতে দেওয়া হত।’ গত ছ’মাসে আরও বেড়েছে অত্যাচার। অভিযোগ, ওই পড়ুয়ার হস্টেলের ঘরের বাইরে প্রস্রাব করে দেওয়া হত রাতে। দরজায় লাথালাথি, বাইরে থেকে দরজা তালাবন্ধ করে দেওয়া হত বলেও অভিযোগ। বলছেন, ‘মেসে আমার খাবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তিন মাস নিজেই রান্না করে খেয়েছি। পিউরিফায়ার থেকে পানীয় জলও নিতে দেওয়া হত না।’ আর এই অভিযোগের সঙ্গে বিস্ফোরক যে অভিযোগ তিনি করেছেন, তা হল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের অঙ্গুলিহেলনেই চলত এই অত্যাচার। আর এখানেই উঠে এসেছে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তীর নামও।সঙ্গে অভিযোগকারী এও জানাতে ভোলেননি, ঘটনা যখন বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছায়, তখন অভিরূপ চক্রবর্তী তাঁকে ধমক দিয়েছিলেন।
এই প্রসঙ্গে টিএমসিপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তী অবশ্য অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। পাল্টা তিনি বলেন, ‘ওই ছেলেটি দীর্ঘদিন ধরে মেস কমিটিতে টাকা দেয় না বলে শুনেছি। একটা সময়ে পরে, মেস কমিটি মেস চালাবে কীভাবে, যদি কেউ টাকা না দেয়!’ একইসঙ্গে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি। বলছেন,’আমি কোনওদিন ওই হস্টেলের আবাসিক ছিলাম না। আর এটি যাদবপুরের হস্টেল নয়, এটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল। এখানে সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। যদি ফুটেজ দেখা হয়, আমাকে গত দেড় বছরেও কোথাও হস্টেলের আশপাশে দেখা যাবে না।’ পাশাপাশি তৃণমূলের তরফ থেকে এও জানানো হচ্ছে, যে পড়ুয়া এই অভিযোগ করছেন, তিনি একজন এসএফআই সমর্থক। এই নিয়ে একটি ছবিও দেখান তিনি। টিএমসিপি রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের দাবি, ‘যাদবপুর কাণ্ড থেকে নজর ঘোরাতেই এসব করছে।’