ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পিছনে আমেরিকা, এমনই রিপোর্ট এল প্রকাশ্যে

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পিছনে আমেরিকার হাত রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন ইমরান খান। তাতেই সিলমোহর পড়ল বৃহস্পতিবার। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর গ্রেফতারির পর সামনে এল আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর পিছনে আমেরিকার হাত ছিল বলে একটি গোপন রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে। সূত্রে খবর, একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমে গোপন রিপোর্টটি ফাঁস করা হয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে নিরপেক্ষ থাকার মাশুল ইমরানকে গুনতে হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন আমেরিকার পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদ খানের সঙ্গে বৈঠক করেন ডোনাল্ড লু সহ মার্কিন বিদেশমন্ত্রকের দুই কর্তা। এরপরই ৮ এপ্রিল ইমরানের বিরুদ্ধে পাক পার্লামেন্টে অনাস্থা আনা হয়। ১০ এপ্রিল ক্ষমতাচ্যুত করা হয় পিটিআই প্রধানকে।
এদিকে ফাঁস হওয়া নথি থেকে জানা গেছে,গত বছর মার্চ মাসে রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসলামবাদ নিরপেক্ষ ভূমিকা নেবে বলে সেই সময় মস্কোকে আশ্বস্ত করেন তিনি। এদিকে পাকিস্তানের এই অবস্থান মেনে নিতে পারেনি আমেরিকা। তৎকালীন আমেরিকার পাক রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদ খানের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের মার্কিন সহ-সচিব ডোনাল্ড লু। একইসঙ্গে এ আশ্বাসও দেন,ইমরানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হলে তবেই পাকিস্তানের উপর জারি করা সমস্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে। আর যদি না সরানো হয়,তবে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। এই বৈঠকের এক মাস পরেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান।
এদিকে ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পিছনে আমেরিকার হাত থাকার যে গোপন রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে, তা অস্বীকার করেছেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের সময় তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রীর সফরকে প্রকাশ্যে সমালোচনা করা হয়েছিল বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে পাক সেনা ও আমেরিকার বিরুদ্ধে একাধিকবার আঙুল তুলেছিলেন ইমরান খান। বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলেন বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। এবার এই রিপোর্ট নিয়ে নতুন করে পাক রাজনীতি উত্তাল হতে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতি মহলের একাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 + eighteen =