ঘূর্ণিঝড় আর কালবৈশাখীর মোকাবিলায় বড় পদক্ষেপ কলকাতা পুলিশের

ঘূর্ণিঝড় আর কালবৈশাখী মোকাবিলায় এবার বড় পদক্ষেপ  কলকাতা পুলিশের। ঝড়ে কলকাতায় গাছ পড়লে যাতে রাস্তা আটকে না থাকে অথবা কোনও বহুতল বা সেতু ভেঙে পড়লেও যাতে উদ্ধার কাজে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য চার কোটির সরঞ্জাম কিনছে লালবাজার।

লালবাজারের সূত্রে খবর, ভাঙড় এখন কলকাত পুলিশের আওতায়। আর এই ভাঙড়ে রয়েছে বিপুল সংখ্যায় গাছ। কোনও বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় বা কালবৈশাখীতে ওই অঞ্চলে বেশি সংখ্যক গাছ যদি পড়ে, তখন তার মোকাবিলা করতে হবে লালবাজারকেই। এ ছাড়াও কলকাতার কিছু থানার হাতেও বিপর্যয় মোকাবিলার সরঞ্জাম তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে পুলিশের। এদিকে কলকাতা পুলিশের প্রত্যেকটি ডিভিশনে এখন রয়েছে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের টিম। তাদের হাতে রয়েছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। প্রত্যেকটি ট্রাফিক গার্ডের হাতেও বিপর্যয় মোকাবিলার সরঞ্জাম তুলে দেওয়া হয়েছে লালবাজারের তরফ থেকে।  তবে এখানেই থেমে থাকছে না লালবাজার। প্রাকৃতিক মোকাবিলার সরঞ্জাম আরও কিনছে। কারণ, পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, গাছ কাটার জন্য যে করাতগুলি রয়েছে, সেগুলি কিছুটা পুরনো মডেলের। তাই এবার আধুনিক বা নতুন মডেলেরবা করাত কেনার প্রয়োজন রয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে যে, বটগাছ ভেঙে পড়লে তার ডাল কাটতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় ডিএমজিকে। বটগাছের শাখা থেকে নির্গত হওয়া আঠায় আটকে যায় করাতের চেন। সেই আঠা পরিষ্কার করার পরই ফের করাত চালু করা যায়। কিছুক্ষেত্রে এমন অবস্থা হয় যে, চেন আর ব্যবহারই করা যায় না। তাই এবার আধুনিক মডেলের করাত ও চেনের উপরই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে লালবাজার। এই প্রসঙ্গেই লালবাজারের তরফ থেকে জানানো হয়, গাছ কাটার জন্য ৩০টি করাত কেনা হচ্ছে। এই বৈদ্যুতিক করাতগুলি গাছের কাণ্ডের অনেক গভীরে বসে যায়, সেই ব্যবস্থাই করা হয়েছে। এ ছাড়াও কেনা হচ্ছে ৫০টি করাতের চেন। এ ছাড়াও হাতে তুলে ব্যবহার করার জন্যও ছোটমাপের দশটি করাত কেনা হচ্ছে। কাটার জন্য ৬টিকর্ডলেসযন্ত্র পুলিশ কিনতে চলেছে। এ ছাড়াও ধাতু কাটার জন্য আরও শক্তদাঁতযুক্তসার্কুলার সবা গোলাকার করাত কিনছে লালবাজার। ১০টি এই গোলাকার করাত কেনার সঙ্গে সঙ্গে ৮০টি নতুন ব্লেডও কেনা হচ্ছে।পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, শুধু ঝড়ের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য নয়, গত বছরই গার্ডেনরিচে ভেঙে পড়ে বহুতল। তারও আগে কলকাতায় ভেঙে পড়েছিল মাঝেরহাট ব্রিজ ও বিবেকানন্দ ফ্লাইওভার। এই ধরনের বিপর্যয়ে ধাতু কাটার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রের প্রয়োজন। তাই পুলিশ এই যন্ত্র কিনে মজুত করছে। আবার চারটিপোর্টেবল হাইড্রোলিক কাটারওনিয়েআসাহচ্ছেএইএকইকারণে।

বর্ষাকালেও বাড়ি ভেঙে কেউ আটকে পড়লে উদ্ধারকাজে যেতে হয় পুলিশকে। তাই গাছের সঙ্গে সঙ্গে ইট, পাথর, পুরনো কড়া, বরগা বা বহুতলের ধ্বংসস্তূপ কেটে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য খুবই শক্তপোক্ত ১৪টিডায়মন্ড চেন সপুলিশ কিনছে। আধুনিক পদ্ধতিতে কাটার জন্য কেনা হচ্ছে দুটিএয়ার প্লাজমা কাটিং মেশিনও। অন্ধকারের মধ্যে যাতে উদ্ধারকাজ বন্ধ না হয়, তার জন্য ২৫টি নতুন ড্রাগন লাইট পুলিশ কিনছে। উঁচু কোথাও সহজে পৌঁছনোর জন্য দুই ধরনের চারটি মই বা সিঁড়িও কেনা হচ্ছে। বদ্ধ কোনও জায়গায় যদি আগুন লাগে, ভিতর থেকে ধোঁয়া বের করার জন্য তিনটি যন্ত্র কেনা হচ্ছে। উদ্ধারকাজের সময় অন্ধকারে আলোর সমস্যা মেটাতে দুটি পোর্টেবল টাওয়ার লাইটও কিনে মজুত করে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 − 7 =