বিরোধী-ঐক্য ছাড়া বিজেপিকে ধরাশায়ী করা সম্ভব নয়। সেই লক্ষ্যে বিরোধী-ঐক্য গড়তে মরিয়া একসময়ের এনডিএ শরিক বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রধান নীতিশ কুমার। বলা ভাল, বিহারের মাটি থেকেই বিরোধী-ঐক্যের বীজ বপন শুরু হয়। স্বাভাবিকভাবেই মঙ্গলবার থেকে বেঙ্গালুরুতে বিরোধী ঐক্যের বৈঠকে বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছে বিহার। কারণ, এই বৈঠকে থাকবেন লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডি-র প্রতিনিধিও।একদিকে যখন বিহারের প্রধান দুই দল বিরোধী-ঐক্য গড়তে মরিয়া, তখন নীতিশ-রাজ্যে সিঁদ কেটে অন্যান্য দলগুলিকে কাছে টানতে মরিয়া বিজেপি। এতে বিরোধী-ঐক্যের রাশ দুর্বল হবে, এটাই স্যাফ্রন ব্রিগেডের লক্ষ্য। আর এখানে বিজেপি টার্গেট করে নিয়েছে বিহারের মহাদলিত ভোটব্যাঙ্ককে। সেই কারণে রামবিলাস পাসওয়ানের দল লোক জনশক্তি পার্টি, জিতেন রাম মাঝির হিন্দুস্তান আওয়ামি মোর্চা, উপেন্দ্র কুশওয়ার রাষ্ট্রীয় সমতা পার্টি-সহ বিহারের ছোট ৯টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এনডিএ-র বৈঠকে। যার মধ্যে এলজেপি প্রধান চিরাগ পাসওয়ান, হিন্দুস্তান আওয়ামী মোর্চার জিতেন রাম মাঝি এনডিএ বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত। এদিকে সূত্রে খবর, সোমবারই চিরাগ পাসওয়ান দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড অমিত শাহের সঙ্গে দেখাও করেন। তবে উপেন্দ্র কুশওয়া এবং বিহারের অন্যান্য দলগুলির প্রতিনিধিরা এনডিএ বৈঠকে থাকবেন না বিরোধী-শিবিরের দিকে ঝুঁকবেন, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। ফলে অঙ্কের নিরিখে বিরোধী-জোটের শক্তি অনেকাংশেই বিহারের উপর নির্ভর করছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
এদিকে, মঙ্গলবার বিরোধী-জোটের বৈঠকের আগে সোমবার বেঙ্গালুরুর পাঁচতারা হোটেলে নৈশভোজে বসছেন বিরোধীরা। এই নৈশভোজের আয়োজন করেছেন সনিয়া গান্ধি স্বয়ং। মূলত, মঙ্গলবারের বৈঠকের আলোচনার এজেন্ডার রূপরেখা নিয়েই এদিনের নৈশভোজে আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর। এছাড়া বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে আসন সমঝোতার সম্ভাবনা ও ফর্মুলা নিয়েও প্রাথমিক আলোচনা হবে। বিরোধী জোটের প্রচারের সাধারণ ইস্যু কী হবে, বিরোধী দলগুলি কীভাবে নিয়মিত কাজ করবে, সেগুলিও চূড়ান্ত করা হতে পারে। এর সঙ্গে রয়েছে বিজেপির দল ভাঙানোর কৌশল। যা বিরোধীদের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। এনসিপি ভাঙনকে ইস্যু করে বিজেপির দল ভাঙানোর কৌশলকে কীভাবে প্রতিহত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে এদিনের নৈশভোজে। এবার এটাই দেখার যে, পটনায় বৈঠকে যে দলগুলি যোগ দিয়েছিল, সেগুলি ছাড়া আরও নতুন ৮টি ছোট রাজনৈতিক দল বিরোধী শিবিরে যুক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে মঙ্গলবারে ডাকা এই বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হয়।