পুরীর মন্দিরের ওপর দিয়ে উড়ে যায় না পাখি, এমনকী যেতে পারে না এরোপ্লেনও

হিন্দুধর্মে চারটি ধামের উল্লেখ আছে। বদ্রীনাথ, দ্বারকা, রামেশ্বরম এবং পুরী। আর এই চার ধামের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় পুরী যাত্রাকে। এই পুরী জগন্নাথ মন্দিরের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। এই বৈশিষ্ট্যগুলিই একে অনন্য করে তুলেছে বহু যুগ ধরে। শুধু তাই নয়, এই এই মন্দির নিয়ে রয়েছে অনেক কিংবদন্তিও। যুগ যুগ ধরে সেইসব কিংবদন্তিতে বিশ্বাসও করে আসছেন ভক্তরা। যেমন, পুরাণ অনুযায়ী, ভগবান বিষ্ণু মর্ত্যলোকে এসে চার ধামে যাত্রা করেন। এই চার ধাম হল, বদ্রীনাথ ধাম, দ্বারকা ধাম, পুরী ধাম এবং রামেশ্বরম। প্রথমে হিমালয়ের শিখরে অবস্থিত উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথ ধামে তিনি স্নান করেন। তারপর গুজরাতের দ্বারকা ধামে গিয়ে বস্ত্র পরিধান করেন। এরপর ওড়িশার পুরী ধামে ভোজন করেন। এবং সবশেষে তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে গিয়ে বিশ্রাম নেন।। যে কারণে বৈকুণ্ঠ পুরী জগন্নাথ মন্দির ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান। এখানে প্রতিদিন আচার-অনুষ্ঠান মেনে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ, সুভদ্রা এবং বলভদ্রের পুজোও করা হয়।

একইসঙ্গে হিন্দু ভক্তরা এও বিশ্বাস করেন যে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দেহত্যাগের পর তাই নশ্বর শরীর দাহ করা হয়েছিল। তখন দেহের একটি অংশ বাদে তাঁর সমস্ত শরীর পঞ্চতত্ত্বে বিলীন হয়ে যায়। কথিত আছে যে, সেই সময় ভগবান শ্রী কৃষ্ণের হৃদয় স্পন্দিত হয়েছিল। এবং সেই হৃদপিণ্ড আজও ভগবান জগন্নাথের মূর্তির ভিতরে সুরক্ষিত রয়েছে।

এমন এক কিংবদন্তি হল, এই মন্দিরের উপর দিয়ে কোনও বিমান চলাচল করতে পারে না। এমনকি এর উপর দিয়ে কোনও পাখিও উড়ে যায় না। এখানেও জড়িয়ে রয়েছে এক বিশ্বাস। কথিত আছে, শ্রীবিষ্ণুর বাহন গরুড় পুরী জগন্নাথ মন্দির রক্ষা করেন। যেহেতু পক্ষীরাজ গরুড় পাখিদের রাজা তাই অন্য পাখিরা মন্দিরের উপর দিয়ে যেতে ভয় পায়। মজার বিষয় হল, জগন্নাথ মন্দির পুরীর উপরে একটি অষ্টধাতুর চক্র রয়েছে। এটি নীল চক্র নামে পরিচিত। আর এই চক্রটি মন্দিরের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া উড়ো জাহাজের গতিপথে বাধার সৃষ্টি করে। কারণ, এই নীল চক্রের ম্যাগনেটিক পাওয়ার এতই বেশি যে, এর জন্য প্লেন এর উপর দিয়ে যেতে পারে না।

এছাড়াও আরও একটা বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে। পুরী জগন্নাথের প্রসাদকে বলা হয় মহাপ্রসাদ। এই প্রসাদ তৈরি হয় বিশেষ পদ্ধতি মেনে। এই প্রসাদটির বিশেষত্ব হল এটি শুধুমাত্র মাটির পাত্রে তৈরি করা হয়। গ্যাস সিলিন্ডার নয়, প্রসাদ রান্না করা হয় কাঠের উনোনে। যখন প্রসাদ প্রস্তুত করা হয়, তখন মাটির পাত্রগুলি একটির উপরে একটি স্থাপন করা হয়।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen + 5 =