ফের উত্তাল রাজ্য বিধানসভার বাদল অধিবেশন। বৃহস্পতিবারও বিজেপি বিধায়করা বিধানসভার বাইরে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এরপরই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই রাজ্যের শাসকদলকে একের পর এক ইস্যুতে বিদ্ধ করেন তিনি। এদিন মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে শুভেন্দু অধিকারী জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনের সামনে দাঁড়িয়ে বলছেন, বিল নেই, করতে হয় করছি। সংবিধানকে না মানা তৃণমূল এসব চায় না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর মুখ থেকে এসব বেরোয়। নামেই সর্বদলীয় বৈঠক। মঙ্গলবার, বুধবার কোনও প্রশ্নোত্তর হয়নি। মহিলা কমিশন সহ সবকিছুর একই অবস্থা। অধ্যক্ষকে ধন্যবাদ মুলতুবি প্রস্তাব মানার জন্য।’ এরপরই শাসকদলকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বিরোধী দলনেতা জানতে চান, ‘বিজেপির সংগঠন নাকি নেই! যেখানে আমাদের এমপি, এমএলএ বিজেপির নেই, তাহলে লুঠ কেন? ব্যালট খেয়েছেন কেন? ডিএমরা ডবল ডবল ব্যালট ছাপিয়েছে কেন?’
এরপরই শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি বিদ্ধ করে বলেন, ‘উনি আমাকে মেদিনীপুরের নেতা করে রেখেছিলেন। বিজেপি আমাকে রাজ্যের নেতা বানিয়েছে। খুব কষ্ট ওনার। তাই বিরোধী দলনেতা বলতে চান না। হ্যাঁ ছিলাম ২০১৮ সালে ওদের সঙ্গে। আমি কাঁথি, তমলুকে ওদের ভোটলুঠ করতে দিইনি। এবার আপনারা পঞ্চায়েতে ভোট লুঠ বেশি করেছেন। তাই ২০২৪-র লোকসভা নির্বাচনে আমাদের ১৮টা সিট ৩৬ হবে। শুধু কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনার মানুষকে ভোট দেওয়ার পরিবেশ করে দিন। জনগণ প্রস্তূত হয়ে আছে। ২০১৭ সালে দুর্গাপুর কর্পোরেশনে ভোট করতে দেননি বলে, এখনও সেখানে হারেন।’ সঙ্গে এও বলেন, ‘শুভেন্দু নাকি নন্দীগ্রামে কারচুপি করে জিতেছে। হ্যাঁ জিতেছে বলেই আপনি কম্পার্টমেন্টাল চিফ মিনিস্টার। জিতেছে বলেই শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে কলার ধরিয়ে পদত্যাগ করিয়ে ছাপ্পা মেরে আপনাকে জিততে হয়েছে। আপনি বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বললেন সেদিন লোডশেডিং ছিল। একই বিল্ডিংয়ে তিনটে বিধানসভা গণনা হয়। মহিষাদল, হলদিয়া এবং নন্দীগ্রাম। হলদিয়াতে বিজেপি জিতেছে, মহিষাদলে ওই একই বিল্ডিংয়ে তৃণমূল প্রার্থী জিতলেন। ওই একই বিল্ডিংয়ে নন্দীগ্রামের প্রার্থী আপনি হারলেন।’
একইসঙ্গে এদিন আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মমতাকে ভোটে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন শুভেন্দু। এই বিষয়ে পরে শুভেন্দুকে প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘দম থাকলে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের আসনগুলি পুনর্গণনা করে দিন না। বড় বড় কথা বলছেন উনি। ২০১৪ সাল থেকে হারছেন। মিত্র ইনস্টিটিউশনে নিজে হেরেছেন তো। কেন্দ্রীয় পুলিশ থাকলেই হারছেন। আবার আগামী বছরে হারবেন। মিত্র ইনস্টিটিউশনে হারবেন, ওনার নিজের বুথেও হারাব।’ শুভেন্দুর এই বক্তব্যের পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লোকসভায় দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ দিচ্ছেন শুভেন্দু? বিরোধী দলনেতা অবশ্য হুঙ্কার দিয়ে রাখছেন, ‘উনি ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী করে দিল্লিতে পালাতে চাইছেন। তো দিল্লিতে যেতে গেলে তো লোকসভায় দাঁড়াতে হবে, নাহলে রাজ্যসভায় পিছনের দরজা দিয়ে যেতে হবে। কিন্তু ভোটে দাঁড়ালেই হারাব। যেখানে দাঁড়াবেন, সেখানেই হারাব।’