হঠাৎ-ই মিলছে না ক্যান্সারের মহার্ঘ ওষুধ। ইমিউনোথেরাপিতে ব্যবহৃত হয় ‘নিভোলুম্যাব’ নামে একটি ওষুধ। সূত্রে খবর, এই ওষুধটি স্বাস্থ্য ভবন ব্লক করেছে। আর তা করা হয়েছে টাকার অভাবে। এদিকে গত ফেব্রুয়ারিতেও বিনামূল্যে পাওয়া ওষুধের তালিকায় এটি ছিল। কিন্তু সেই ওষুধ আর দিতে পারছে না স্বাস্থ্য দপ্তর, এমনই অভিযোগ ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর পরিবারের সদস্যদের। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য দপ্তরের এমন সিদ্ধান্তে অথৈ জলে পড়েছেন ক্যান্সার আক্রান্তরা। শুধু ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী বা তাঁদের পরিবারের সদস্যরাই নন, চিকিৎসকদের একাংশও বিষয়টি নিয়ে বিস্মিত।
এদিকে স্বাস্থ্যভবন সূত্রে বলা হচ্ছে, অর্থাভাবেই ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই এই ওষুধটি সিস্টেমে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, সরকারি হাসপাতালে এই ধরনের ওষুধ থাকবে কি থাকবে না, তা নির্ধারণ করতে স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটিই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এই ওষুধ সরকারি হাসপাতালে দেওয়া চালু করে। যেহেতু কমিটি এই ওষুধের পরামর্শ দিয়েছে, তাই সরকারি হাসাপাতালের চিকিৎসকরাও সেই ওষুধ ব্যবহার করছেন। আর এখানেই প্রশ্ন, এরপরও কেন তা সিস্টেমে ব্লক করা হল তা নিয়েই।
প্রশ্ন রয়েছে আরও। এই ওষুধের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। দু’বছরের জন্য বরাত দেওয়া হলেও কেন তা মাঝপথে থমকে গেল, প্রশ্ন উঠেছে সেখানেও। সঙ্গে এ প্রস্নও স্বাভাবিক ভাবে উঠে এসেছে, কেন স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে আগেই হিসাব ছকে নেওয়া হয়নি, যে কত পরিমাণ ওষুধের জন্য কত টাকার প্রয়োজন।
যে সব রোগী অসম্পূর্ণ চিকিৎসা পেয়েছেন, তাঁরা পড়েছেন মহা সমস্যায়। ক্যান্সার চিকিৎসকরা জানান, ‘নিভোলুম্যাব অত্যন্ত দামী ওষুধ। এটা কিন্তু সবাই জানে। সরকারের তো কমিটি রয়েছে। এটা জেনে সরকারি সিস্টেমে অন্তর্ভুক্তও করলেন, করে আবার তা দু’মাসে ব্লকেও করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অর্থহীন। যে সমস্ত ক্যান্সার রোগীদের এই ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা হল, তারা তো আশায় বাঁচছেন। এটা একটা ম্যাজিক ড্রাগ। যেখানে কোনও কেমো থেরাপি কাজ করছে না, নিভোলুম্যাবে কাজ হচ্ছে। সেটা এখন এক কলমের খোঁচা বন্ধ হয়ে যাওয়া বড় বিস্ময়ের।’ এদিকে এর পাশাপাশি এও অভিযোগও উঠছে, ভিভিআইপি রোগী যাঁরা, তাঁদের জন্য আলাদাভাবে রিক্যুইজিশন করে এই ওষুধ কেনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফলে সব মিলিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে স্বাস্থ্য দপ্তরের এই সিদ্ধান্ত।