সাফাইকর্মীদের ৭ ঘণ্টা কাজ করতেই হবে, কড়া পদক্ষেপ কলকাতা পুরসভার

সাফাইকর্মীদের ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ কলকাতা পুরসভার। দিনে সাত ঘণ্টা কাজ করতেই হবে। নইলে তাঁকে দেখানো হবে অ্যাবসেন্ট। এদিকে আগের মতো অফিসারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাজিরা খাতায় সই করে বেরিয়ে যাওয়ারও সুযোগ নেই। কেননা সম্প্রতি সাফাই বিভাগে বসেছে বায়োমেট্রিক মেশিন। কারণ, শহরের বিভিন্ন জায়গায় জঞ্জাল পড়ে থাকত। বাড়ি বাড়ি জঞ্জাল সংগ্রহের কাজটাও ঠিকমতো হতো না। সেই সব অবাধ্য কর্মীদের বাগে আনতেই বায়োমেট্রিক হাজিরা চালুর সঙ্গে কাজের সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই শহরের ছবিটা অনেকটা বদলাতে শুরু করেছে বলে দাবি পুরকর্তাদের। জঞ্জাল সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘সাফাইকর্মীরা কাজ করেন বলেই শহর এত সুন্দর রয়েছে। তবে কেউ কেউ ফাঁকিবাজ। তাঁদের জন্যই এই ব্যবস্থা। এতে শহর আরও পরিচ্ছন্ন থাকবে।’
এদিকে কাজে যোগ দেওয়ার আগে এবং কাজ শেষের পরে বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙুলের ছাপ মিলিয়ে দেখার পাশাপাশি প্রতিটি সাফাইকর্মীর ফেস আইডি যাচাই করা হচ্ছে। ফলে অন্য কাউকে দিয়ে কার্ড পাঞ্চ করিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকছে না। সাত ঘণ্টার কম ডিউটি করলেই বায়োমেট্রিক মেশিনে ধরা পড়ে যাচ্ছে। এতে কোথাও কোথাও বিক্ষোভের ঘটনাও যে ঘটছে না তা নয়। তবে মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন,’বায়োমেট্রিক হাজিরা কোনওমতেই বন্ধ করা হবে না।’ এদিকে আবার সাফাইকর্মীদের হাজিরা নিয়ে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার। তাতেই সাত ঘণ্টার ডিউটির কথা বলা হয়েছে। লেট করলে আউট পাঞ্চও সাত ঘণ্টার হিসেবেই হবে। বসকে চিঠি দিয়ে জানাতে হবে লেটের কারণও। তবে ১৫ আগস্ট, ২৬ জানুয়ারি-সহ বিভিন্ন সরকারি ছুটির দিনে হাজিরা খাতায় সই করলেই চলবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, আপাতত সাফাই বিভাগ দিয়ে কাজটা শুরু হলেও খুব শিগগিরই কেন্দ্রীয় পুরভবনেও একই নিয়ম বলবৎ হবে। পুরসভার ফিন্যান্স, লাইসেন্স, পার্সোনেল বিভাগে ইতিমধ্যে নাম এনরোলমেন্টের কাজ শেষও হয়েছে। পুরকর্তারা জানাচ্ছেন, কলকাতা শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সাফাইকর্মীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত অনেক সাফাইকর্মী ঠিকমতো নিজেদের দায়িত্ব পালন করতেন না। কেউ কেউ কাজ না-করেই হাজিরা খাতায় সই করে চলে যেতেন। ফলে যে কাজটা হওয়ার কথা ছিল তা ঠিকমতো হচ্ছিল না। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় জমছিল আবর্জনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × four =