হাসান ইমরানকে রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান করায় ফের বিতর্কের মুখে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। এই ইস্যুতে সরব হয়েছে রাজ্য বিজেপি। তাদের অভিযোগ, তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ হাসান ইমরানের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগকে ঢাল করেই রাজ্যপাল সহ কেন্দ্রের কাছে দ্বারস্থ হল রাজ্য বিজেপি। সোমবার রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোস সহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি-র কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানো হয় রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে।
হাসান ইমরানকে সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান করার প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন টুইট করেন রাজ্য বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি চার্লস নন্দীও। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘দেশবিরোধী কার্যাকলাপে অভিযুক্ত হাসান ইমরানকে সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান করেছে রাজ্য সরকার। বাংলাদেশ সরকার আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে উদ্বেগজনক রিপোর্ট দিয়েছিল। যদিও বিজেপির অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।‘
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে আহমেদ হাসান ইমরানকে রাজ্যসভার সাংসদ করে তৃণমূল। সেই সময় ইমরানকে সাংসদ করার ব্যাপারে বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। হাসান ইমরানের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী কার্যকলাপের একাধিক অভিযোগ কেন্দ্রের কাছে রয়েছে। তিনি দীর্ঘ সময় বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জেএনবি অর্থাৎ জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ-এর এই দেশের প্রধান ছিলেন বলে অভিযোগ। এছাড়া নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন সিমি অর্থাৎ স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া-র সঙ্গেও নাম জড়ায় হাসান ইমরানের। শুধু তাই নয়, তিনি দীর্ঘদিন এই সংগঠনের মাথা হিসাবে কাজ করে গিয়েছেন বলেও অভিযোগ। আর এই অভিযোগের সঙ্গে এব্যাপারে বহু তথ্য-প্রমাণ মিলেছে বলেও জানায় এনআইএ। এদিকে সিমি-র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসাবে একসময়ে দায়িত্বে থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু, কেন্দ্র সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর তিনি আর যোগাযোগ রাখেননি বলেও জানান তিনি। যদিও প্রাক্তন সাংসদের এই দাবি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। আবার আল কায়দা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গেও ইমরানের যোগ ছিল বলে অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, চিটফান্ড সংস্থা সারদা কেলেঙ্কারিতেও নাম জড়ায় প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরানের। তিনি সারদা পাবলিশার্স ও প্রিন্টার্স লিমিটেডের ডিরেক্টরদের মধ্যে একজন ছিলেন বলে সূত্রের খবর। তাই সারদার তদন্তে বেশ কয়েকবার সিবিআই জেরার মুখেও পড়তে হয় ইমরানকে। মূলত, হাসান ইমরান পরিচালিত সংবাদপত্র কলম সারদার টাকায় চলত বলে অভিযোগ। সেই সংবাদপত্রের হিসাব নিতেই একাধিকবার ইমরানকে তলব করে সিবিআই। যদিও রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার আগেই তিনি সারদার পদ ছাড়েন বলে সূত্রে খবর।