উলুবেড়িয়া পঞ্চায়েতে নথি বিকৃতি মামলা, বিচারপতি সিনহার বেঞ্চে ফিরল মামলা

উলুবেড়িয়ার পঞ্চায়েতের নথি বিকৃত করার মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশে কোনও হস্তক্ষেপ করল না ডিভিশন বেঞ্চ। মামলা ফেরত গেল সিঙ্গল বেঞ্চেই। সিঙ্গল বেঞ্চকে বিস্তারিতভাবে এসডিও-র বক্তব্য শোনার পরামর্শ ডিভিশন বেঞ্চের। এসডিও-র বক্তব্য শুনে তারপরেই চূড়ান্ত নির্দেশ দেবে সিঙ্গল বেঞ্চ, এমনটাই নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের। উলুবেড়িয়ায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে এক প্রার্থীর জাতি শংসাপত্র বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছিল। এরপরই প্রশ্ন ওঠে বিডিও এবং এসডিও-র ভূমিকা নিয়েও। এরপরেই হাইকোর্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেয় বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। সম্প্রতি এই কমিটি অনুসন্ধান রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। সেখানে বিডিও, এসডিও এবং অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের আধিকারিককে সাসপেন্ডের সুপারিশ করা হয়।

কমিটির দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, সিঙ্গল বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, উলুবেড়িয়ার এসডিও শমীককুমার ঘোষ, বিডিও নিলাদ্রীশেখর দে, জাতি শংসাপত্র বিভাগের অতিরিক্ত ইনস্পেক্টর কৃপাসিন্ধু সামইয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা উচিত। উলুবেড়িয়ার বিডিও-এসডিও-কে সাসপেন্ড করার জন্য রাজ্যকে সুপারিশ করেন বিচারপতি সিনহা। এর আগে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিলেন বিডিও। তাঁর আবেদন আগেই খারিজ করেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। শুধু বিডিও নন, ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন এসডিও-ও। শুক্রবার এই মামলাটি ওঠে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। তবে এদিন সিঙ্গল বেঞ্চের কোনও নির্দেশে হস্তক্ষেপ করেনি ডিভিশন বেঞ্চ।

এদিন ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘মনোনয়নপত্রে তথ্য বিকৃতি মামলায় যে রিপোর্ট পেশ করেছে কমিটি তাতে অনিয়ম হয়েছে বলে মনে করছে আদালত। সিঙ্গল বেঞ্চ সাসপেন্ড সম্পর্কিত যে কথা বলছে তা প্রাক্তন বিচারপতি পরিচালিত কমিটির রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে। তিন আধিকারিকের সাসপেনশন সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের শীর্ষ কর্তাদের বিবেচনা করতে বলেছে সিঙ্গল বেঞ্চ। নতুন করে এই বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়ার আগে সিঙ্গল বেঞ্চ এসডিও-র বক্তব্য শুনবে।’

এরপর ডিভিশন বেঞ্চ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের স্বার্থে প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেয়। এই কমিটির রিপোর্ট কোথাও চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। সিঙ্গল বেঞ্চ এই কমিটির রিপোর্ট দেখে পদক্ষেপ করেছে। এক্ষেত্রে এসডিও ব্যক্তিগত ক্ষমতায় নিজের বক্তব্য জানাতে পারবেন। সেক্ষেত্রে সিঙ্গল বেঞ্চের কাছে করতে হবে আবেদন। সর্বোপরি সিঙ্গল বেঞ্চের কোনও নির্দেশে হস্তক্ষেপ করেনি ডিভিশন বেঞ্চ।

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নের সময় উলুবেড়িয়ার বাহিরা ১ নং গ্রাম পঞ্চেয়াতের বাম প্রার্থী কাশ্মীরা বেগমের মনোনয়নপত্র বিকৃত করার অভিযোগ ওঠে। এই আসনটি ওবিসি-দের জন্য সংরক্ষিত ছিল। অভিযোগ ওঠে কাশ্মীরার জাতিগত শংসাপত্র বিকৃত করার বিষয়ে অভিযোগ পাওযার পরেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেননি স্থানীয় বিডিও। এই সূত্রেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই বাম নেত্রী। এরপর মামলায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 − five =