ওষুধ ব্যবসায়ীর ঘরে ঢুকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ছেলেকে অপহরণ। তবে ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে ওই অপহৃত কিশোরকে উদ্ধার করে হাওড়া পুলিশ।
অপহৃত কিশোরের বাবা দিলীপ কুমারের অভিযোগ, তাঁর ১৯ বছরের ছেলে প্রিন্স কুমারকে অপহরণ করে , সঞ্জয় রজক নামে এক ব্যক্তি ও তাঁর দলবল। বাড়ি থেকেই রুপোলি রংয়ের এক গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় প্রিন্সকে। ব্যবহৃত গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৮৫৭৫। এরপর দেড় লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন যায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে। সঙ্গে এও বলা হয়, তাঁকে হাওড়ায় গিয়ে টাকা দিয়ে আসতে। দিলীপের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েই তৎপর হয়ে ওঠে প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ। দিলীপ কুমারকে পুলিশ নির্দেশ দেয়, যাতে তিনি অপহরণকারীদের কথা মতো চলেন। অন্যদিকে, পুলিশ ততক্ষণে ট্র্যাক করতে থাকেন। এরপর পুলিশ প্রিন্স কুমারকে উদ্ধার করে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সঞ্জয় রজক, রাজেশ রজক, বিশাল যাদব, সোনু কুমার মল্লিক ও আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক করা হয় অপরহরণে ব্যবহৃত গাড়িটিও।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, অপহৃত শিশুর বাবা অভিযুক্ত অপহরণকারীর থেকে দেড় লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেই টাকা বারবার চাওয়ার পরেও শোধ করেননি বলে অভিযোগ। সেই কারণেই অপহরণ করা হয় বলে দাবি ধৃতদের। পাশাপাশি পুলিশের তরফ থেকে এও জানানো হয়, প্রিন্সকে অপহরণ করে হাওড়ার পিলখানা রোডের একটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে ভিডিয়ো কল করে তার বাবার থেকে দেড় লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। যে নম্বর থেকে ভিডিয়ো কল করা হয়েছিল, সেই নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশ হাওড়ায় পৌঁছয়। অন্যদিকে অভিযুক্ত সঞ্জয় দিলীপকে জানিয়েছিলেন, হাওড়ায় টাকা নিয়ে আসতে হবে। সেই মতো দিলীপকে টাকা নিয়ে যেতে বলে পুলিশ। দিলীপের ওপর নজর রাখতে থাকে পুলিশও। প্রগতি থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশের দল অপহরণকারীদের ধরার জন্য দূর থেকেই নজর রাখছিল। ফোনের ওপার থেকে সঞ্জয়ের নির্দেশ মতো এ গলি-সে গলি হয়ে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছন দিলীপ। পুলিশও তাঁকে অনুসরণ করছিল। দিলীপের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সময়েই অভিযুক্তদের হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় অপহৃত প্রিন্স কুমারকে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় সঞ্জয় রজক, রাজেশ মল্লিক, সোনু কুমার মল্লিক, বিশাল যাদব-সহ আরও ৩ জন। সোনালি রং-এর ‘ওয়াগনর’ গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। কোনও অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, পুলিশ খতিয়ে দেখছে।