দেহের ওজন বাড়লে তা কমানোটা বেশ কঠিন। অথচ নিজেকে সুস্থ সবল রাখতে এই ওজন কমানোটাও বিশেষ জরুররি। অনেক চেষ্টা করেও বহু সময় ঠিক মতো ওজন কমানো সম্ভব হয় না। কেউ কেউ সামান্য ঘরের কাজ কিংবা অল্পস্বল্প এক্সারসাইজ অথবা হাঁটাহাঁটি করেই ওজন ফেলেন। কিন্তু অনেকে আবার কঠোর পরিশ্রম করেও সেভাবে ওজন কমাতে পারেন না।
এদিকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে সবথেকে বড় সমস্যা হল, সময়ের অভাব। ফলে আলাদা করে আর এক্সারসাইজের জন্য সময় বেশ কঠিন ব্যাপার। তবে ওজন কমানোর জন্য খুব সাধারণ একটা উপায় রয়েছে। তা হল হাঁটা। আসলে হাঁটলে কিন্তু ওজন দারুন ভাবে কমে। কিন্তু কতক্ষণ হাঁটতে হবে সেটা আগে বুঝে নেওয়া জরুরি।
এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন কত কিলোমিটার হাঁটতে হবে, তার কোনও নির্দিষ্ট মাপ নেই। এর জন্য বিভিন্ন জনের অভিজ্ঞতা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য অনুযায়ী, ১ মাইল অর্থাৎ ১.৬ কিলোমিটার হাঁটলে গড়ে ৫৫ থেকে ১৪০ ক্যালোরি ঝরে। এটা নির্ভর করছে আমাদের হাঁটার গতির উপর।
এদিকে ব্রিটিশ ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, প্রতিদিন অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি গতিতে হাঁটা উচিত। কেউ যদি দ্রুত গতিতে হাঁটেন, তবে ৭৫ মিনিট হাঁটলেই যথেষ্ট। এখন আবার বিভিন্ন অ্যাপে বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন ১০ হাজার স্টেপ হাঁটার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, কত কিলোমিটার হাঁটাহাঁটি করে কত পরিমাণ মেদ ঝরানো সম্ভব। এক কথায় এর উত্তর হল, প্রতিটি মানুষের ওজন কমে ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে। কেউ কেউ এক মাসের মধ্যে ১০ কেজি চর্বি ঝরাতে পারেন তো আবার কারওর কারওর ক্ষেত্রে ১০ কেজি ওজন কমাতে ২ মাসেরও বেশি সময় লেগে যায়।
এরই পাশাপাশি চিকিৎসকদের একাংশ এও জানাচ্ছেন, কোনও ব্যক্তির ওজন বৃদ্ধি এবং ওজন না কমা অনেকগুলি কারণের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, ওজন কমানোর জন্য বেশি করে শারীরিক পরিশ্রম করার পরামর্শ দেওয়া হয়। দ্রুত পরিশ্রমের অর্থ হল, হাঁটার সময় গতি ঘণ্টায় কমপক্ষে ৬ কিলোমিটার হওয়া উচিত। যদি কেউ এর চেয়ে বেশি গতিতে হাঁটেন বা দৌড়ন, তাহলে দ্রুত ওজন হ্রাস হবে। তবে শুধু হাঁটলেই ওজন কমবে না। ওজন কমানোর জন্য আমাদের খাদ্যের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খাদ্য তালিকা থেকে অস্বাস্থ্যকর জিনিস খাবার বাদ দিতে হবে। আর স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যালান্সড ডায়েটও মেনে চলা জরুরি। এছাড়া ওজন কমানোর জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম এবং চাপমুক্ত জীবনও গুরুত্বপূর্ণ। এসব কিছুর পাশাপাশি আমাদের এটাও দেখতে হবে যে, ওজন বৃদ্ধির জন্য অন্য কোনও রোগ দায়ী কি না, তাও।