বৃহস্পতিবার সকালে একযোগে তিন জায়গায় হানা ইডির

 

আরজি কর দুর্নীতির তদন্তে কোমর বেঁধে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই-র পর এবার জায়গায় জায়গায় তল্লাশি অভিযান চলছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তরফ থেকেও। ইডি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ভোরেই আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতি মামলায় তদন্ত করতে সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ চন্দন লৌহর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। পাশাপাশি কালিন্দী হাউজিং এস্টেটেও হানা দেয় ইডি। দুই জায়গাতেই একযোগে চলে তল্লাশি।

বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টা নাগাদ টালা এলাকায় চন্দন লৌহের ফ্ল্যাটে হানা দেয়। ইডি সূত্রে এও জানা যাচ্ছে, আর্থিক দুর্নীতির তদন্তেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে। চন্দন লৌহ আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডঃ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত। আরজি কর হাসপাতালে তাঁর একটি ফুড স্টল রয়েছে। অভিযোগ, বেআইনিভাবে চন্দন লৌহকে এই ফুড স্টলের টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছিলেন। এছাড়া আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতিতেও জড়িত থাকার অভিযোগ চন্দন লৌহর বিরুদ্ধে। এর আগে সিবিআই-ও একাধিকবার চন্দন লৌহকে আরজি করের দুর্নীতি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল। চন্দন লৌহের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। এবার ইডির হানা।

শুধু চন্দন লৌহ-ই নয়। ইডির হানা চলছে কালিন্দী হাউজিং এস্টেটেও। সেখানে রয়েছে অকটেন মেডিকেল-র অফিস। বাড়িটি ভাড়ায় দেওয়া বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। বছর দুই আগে থেকে এই অফিস শুরু হয়। দেবদত্ত চ্যাটার্জি নামক এক ব্যক্তি এই অফিসের মালিক। সার্জিকাল মেশিন সাপ্লাই এর কাজ করে অকটেন মেডিক্যাল। আরজি কর হাসপাতাল এই কোম্পানি থেকে বেশ কিছু মেশিন কিনেছিল, যে মেশিনের দাম বাজার দর থেকে বেশি দামে কেনা হয়েছিল বলে ইডি সূত্রের খবর। অফিসের উল্টো দিকের বাসিন্দার জানাচ্ছেন, অনেক লোকের যাতায়াত ছিল এই অফিসে। রাত বাডলেই আনাগোনা বাড়ত। রাতে পার্টি চলত ওই বাড়িতে।

এছাড়া চিনার পার্কে সন্দীপ ঘোষের পৈত্রিক বাড়িতেও হানা দেয় ইডির আধিকারিকরা।  এই বাড়িতে সন্দীপ ঘোষের বাবা সত্যপ্রিয় ঘোষ থাকতেন। এই বাড়িতেই সিবিআই তিলোত্তমা ধর্ষণ ও খুনের মামলায় হাজিরার নোটিস দিয়ে গিয়েছিলেন। এবার আরজিকর দুর্নীতি মামলায় সাতসকালে ইডির তল্লাশি। তবে বাড়ির চাবি না মেলায় দীর্ঘ এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় তদন্তকারী আধিকারিকদের। পরবর্তী সময়ে চাবি নিয়ে এসে খুলে বাড়িতে প্রবেশ করেন ইডির আধিকারিকেরা। এই মুহূর্তে সন্দীপ ঘোষের আর্থিক দুর্নীতি মামলার তথ্যের অনুসন্ধান করছেন ইডির আধিকারিকরা, এমনটাই সূত্রে খবর।

আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়াকে নির্মমভাবে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরই আঁচ মিলেছিল দুর্নীতির। সরকারি হাসপাতালের ভিতরে দুর্নীতির বাসা ভাঙতেই প্রথমে গ্রেফতার হন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডঃ সন্দীপ ঘোষ। দুর্নীতি মামলাতেই সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁর বাড়িতে একাধিকবার হানা দিয়েছে ইডিও। এবার সন্দীপ ঘনিষ্ঠদের জালে তোলার পালা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − five =