ফের বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণ। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার রাজুয়া গ্রাম। আর এই বিস্ফোরণে ভেঙে গেল পরিত্যক্ত এক বাড়ি। ঘটনায় নিহত এক, জখম তিন।
শুক্রবার সন্ধে সাড়ে ৮টা নাগাদ হঠাৎ পরপর দুটি বিকট শব্দ শুনে বেরিয়ে আসেন রাজুয়া গ্রামের বাসিন্দারা। দেখা যায়, গ্রামের একটি পরিত্যক্ত মাটির বাড়ি ধসে পড়েছে। আর সেখান থেকেই আহত অবস্থায় বেরিয়ে আসছেন এক ব্যক্তি। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশের বিশাল বাহিনী। খবর পেয়ে কাটোয়া মহকুমা পুলিশ ও এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রিও ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আহত তুফান চৌধুরী রাজুয়া গ্রামেরই বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তুফান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই একাধিক মামলা চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, ১২ দিন আগেই তুফান জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন।
এদিকে বিস্ফোরণ থেকে উদ্ধার মৃতদেহের পরিচয় মিলেছে। জানা গিয়েছে তিনি বীরভূম জেলার নানুরের বাসিন্দা। পুলিশ এখনও তাঁর বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বেশ কয়েকদিন ধরেই বালিঘাট দখল, জমি দখলদারি নিয়ে তুফান ও আরেক গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। অভিযোগ, তুফান বাইরের লোক নিয়ে এসে বোমা তৈরি করছিলেন। আর সেটা সম্ভবত বালিঘাট নিজের দখলে রাখার উদ্দেশ্যেই করা হচ্ছিল।
প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, বোমা বানানোর সময় দুর্ঘটনাবশত ফেটে যাওয়ায় বিকট বিস্ফোরণ ঘটেছে। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়েই তুফান কীভাবে বোমা তৈরি করছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি জনবহুল এলাকায় কীভাবে এত বিস্ফোরক মজুদ করা হল, তাই নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। বিস্ফোরণের পর থেকে এলাকাটি ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। বাড়ির মাটি ও ধ্বংসস্তূপ পরীক্ষা করা হচ্ছে। তুফানের ফোনে তার গতিবিধি ও গত কয়েকদিনের কার্যকলাপ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় স্থানীয়দের প্রশ্ন, গ্রামের মধ্যে পরিত্যক্ত বাড়িতে এত বোমা তৈরির সরঞ্জাম আনা সত্ত্বেও পুলিশ তা কেন জানতে পারল না তা নিয়েই।