পুজোর আগেই কলকাতা পুরসভার সব বিভাগে শুরু ফেস রেকগনিশন বায়োমেট্রিক ব্য়বস্থা

সুখের দিন শেষ কলকাতা পুরসভার কর্মীদের একাংশের। যাঁরা দুপুর বারোটায় এসে বিকেল চারটেয় বাড়ি চলে যেতেন তাঁরা এবার বেশ সমস্যার মুখে। কারণ, হাজিরার ক্ষেত্রে এবার নবান্নের মতোই ফেস রেকগনিশন বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে পুরসভায়। এই নয়া ব্যবস্থার দৌলতে কর্মীরা অফিসে এসে নতুন মেশিনের সামনের দাঁড়ালেই ছবি উঠে যাবে। আর তখনই তা চলে যাচ্ছে সরকারি সার্ভারে। ছবি ওঠার সঙ্গেই রেকর্ড হয়ে যাবে তাঁর উপস্থিতির সময়ও। একই পদ্ধতি অফিস ছাড়ার সময়েও।

পাশাপাশি এও জানা গেছে, পুরসভার তরফ থেকে এমন পদক্ষেপ নেওয়ার কারণ হল, কর্মীদের একাংশের মধ্যে নির্দিষ্ট সময় না আসার অভ্যেস রয়েছে। অনেকে সকাল এগারোটার আগে অফিসে আসেন না। অনেকে তারও পরে আসেন। আবার বিকেল চারটের পর থেকেই বাড়ি ফেরার তাড়া শুরু হয়ে যায়। এই প্রবণতা বন্ধ করার জন্যই এই উদ্যোগ নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। কর্মীদের উপস্থিতি ঠিক থাকলে স্বাভাবিক ভাবে কাজেও আসবে গতি।

এদিকে পুরসভা সূত্রে খবর, সাফাই এবং সম্পত্তিকর মূল্যায়ন ছাড়া বাকি সব বিভাগেই এখনও রয়েছে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হাজিরার ব্যবস্থা। ফলে তার সুযোগ নিয়ে অনেকেই নির্দিষ্ট সময় মেনে অফিস করছিলেন না। সম্প্রতি সারপ্রাইজ ভিজিটে বেড়িয়েও পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের নজরে আসে, উদ্যান, পরিবেশ, বিদ্যুৎ বিভাগের ৭০ শতাংশ কর্মীই বিকেল চারটের মধ্যে অফিস থেকে বেরিয়ে গেছেন। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নবান্নর মতোই কলকাতা পুরসভাতেও আনতে হবে ফেস রেকগনিশন সিস্টেম। এরপর যে যে দপ্তরে নয়া এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, কর্মীদের ৮০ শতাংশ সঠিক সময়ে অফিসে আসা শুরু করেছেন। নয়া এই ফেস রেকগনিশন বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা সম্পর্কে পুরসভার শীর্ষ আধিকারিকদের বক্তব্য, এই ব্যবস্থায় মেশিনে যে নজরদারি চলে তাতে সব তথ্য রেকর্ড হয়ে যায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধিতে। আর তা পরিবর্তন করার কোনও সুযোগ নেই। যাঁরা তিন দিন লেট হচ্ছেন সেই কর্মীর একটি ক্যাজুয়াল লিভ (সিএল) কাটা পড়ছে। ফলে, স্বাভাবিক ভাবেই সবাই সময়ে আসার চেষ্টা করবেন।’

পুর কমিশনার বিনোদ কুমার এই নয়া হাজিরা ব্যবস্থা বাস্তবায়িত করার জন্য শনিবার নির্দেশিকা জারিও করা হয়। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পুরসভার কেন্দ্রীয় ভবনের সব কর্মীদেরই ফেস রেকগনিশন বায়োমেট্রিকের মাধ্যমেই হাজিরা দিতে হবে। সোমবার থেকে শুরু কর্মীদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের কাজ। পুজোর আগেই এই নয়া ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে বলে দাবি পুর কর্তাদের। পুরভবনের প্রতিটি তলায় অন্তত ৪ টি করে মেশিন বসানো হবে বলে প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে। এক আধিকারিক বলেন,’শহরের যাবতীয় পরিষেবা আমরা দিয়ে থাকি। ফলে, কর্মীরা ঠিকমতো অফিসে সময় না দিলে কাজে তার প্রভাব পড়ে। নয়া ব্যবস্থায় সেই সমস্যা মেটানো যাবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − seven =