কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হতে দেখা গেল কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমকে। রবিবার ৬ অগাস্ট ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থান কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র বাক্যবাণে বিঁধতে দেখা গেল রাজ্য়ের হেভিয়েট মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। এদিন তিনি অবস্থান মঞ্চ থেকে জানান, ‘১২টা থেকে চারটে পর্যন্ত গণ অবস্থান করছি। সব ব্লকে এই গণ অবস্থান চলছে। কারণ, অনেকবার বলার পরেও অনেক চিঠি দিয়েও, সাংসদরা একাধিকবার মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করার পরেও বঞ্চনা শেষ হচ্ছে না। ১০০ দিনের টাকা ভারতের সকল নাগরিকের অধিকার। জব কার্ড থাকলে মানুষ তা পান। বাংলা ১০০ দিনের কাজে ১ নম্বর হয়েছে, মোদি দেখলেন। টাকা বন্ধ করে দেওয়া হল। গরিব মানুষ নিজের বাড়িটাকে পাকা করতে পারবেন আবাস যোজনায়। বাড়ি ভাঙল ভিত গড়ল। বাংলার অনুদান থেকে টাকা পেলেন। কিন্তু ঢালাইয়ের সময় কেন্দ্র টাকা আটকে দিল। মাথার ছাদ হল না। বর্ষার দিনে ছাউনি দিয়ে কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছেন। এগুলোকেই আমরা বলছি বঞ্চনা।’ আর এখানেই ফিরহাদের প্রশ্ন, ‘নরেন্দ্র মোদি বঞ্চনা করছেন কেন? আপনাদের লক্ষ্য ছিল ২০০। হল না, সেই শুরু হয়ে গেল বঞ্চনা!’
এরই পাশাপাশি ফিরহাদ এদিনের মঞ্চ থেকে এ প্রশ্নও তোলেন, পিএম কেয়ার ফান্ডের লক্ষ লক্ষ টাকা কোথায় খরচ করছেন প্রধানমন্ত্রী তা নিয়ে। পিএম কেয়ার ফান্ড যাঁরা ভুলে গেছেন তাঁদের মনে করিয়েও দেন, কোভিডে টাকা তুলেছিলেন পিএম কেয়ার ফান্ডের নামে। এখানেই ফিরহাদের বক্তব্য, পিএম কেয়ার ফান্ডের নামে যে টাকা তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী তা খরচ করছেন নিজের প্রচারে। এই রকম টাকা বাংলা থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও উন্নয়নের টাকা ফেরত আসেনি। আপনি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন আপনি বলেছিলেন রাজ্যর জন্য বরাদ্দ বারানো হোক। যেই প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন ভোল বদলে গেল। সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে এও মনে করিয়ে দেন, বাংলা মাথা নত করে না।
ইডি-সিবিআই নিয়েও এদিন তোপ দাগেন ফিরহাদ। তাঁর কথায়, ‘আপনারা পুঁজিপতিদের সুবিধা করার জন্য পেট্রল ডিজেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আপনি বলছেন আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত, আপনি তো দুর্নীতির আখড়া শুরু করেছিলেন। মীনাক্ষী লেখি বলছেন বেশি বাড়াবাড়ি করলে ইডি পাঠিয়ে দেব, সিবিআই পাঠিয়ে দেব।’ এখানেই অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরহাদকে এ প্রশ্নও করতে দেখা যায় যে, ‘ইডি আপনার বাবার, সিবিআই আপনার বাবার! আমরা একটা সময় নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সিবিআই চাইতাম। কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠানগুলো নষ্ট করে দিয়েছেন।’ এদিনের বক্তব্য়ে এসে পড়ে ভাষার প্রসঙ্গও। প্রসঙ্গত, রবিবারই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইট করে জানিয়েছেন, ‘হিন্দি পড়তেই হবে।’ আর এখানেই মন্ত্রী ফিরহাদের বক্তব্য, ‘আমরা ছোট থেকে পড়েছি নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের কথাতেই জোর দিয়েছিলেন বাংলার মনীষীরা। সেখানে জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দিচ্ছেন।‘ আর এরই রেশ ধরে শাহকে ফিরহাদের বার্তা, ‘আপনি চাপিয়ে দিতে পারেন না।’