পুলিশ আধিকারিকের বদলিতে বন্ধের মুখে ফ্রি কোচিং সেন্টার। সেই কারণে আধিকারিককে ফেরাতে স্মারকলিপি পর্যন্ত জমা দিতে দেখা গেল পড়ুয়ারা। স্থানীয় সূত্রে খবর, চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের শ্রীরামপুর থানার অন্তর্গত শেওড়াফুলি ফাঁড়ির উদ্যোগে ও বৈদ্যবাটী পুরসভার সহযোগিতায় চলছিল চাকরি ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা ফ্রি কোচিং সেন্টার। হঠাৎ তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় চাকরিপ্রার্থীরা।
গত বছর নভেম্বর মাসের ৭ তারিখ থেকে শুরু হয় এই কোচিং। আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে শুরু হয় চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি কেন্দ্র।এই চাকরি পরীক্ষার প্রস্তুতি কেন্দ্রের নেপথ্যে ছিলেন শেওড়াফুলি ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক রঞ্জন দাস।
প্রতি রবিবার শেওড়াফুলি সুরেন্দ্রনাথ স্কুলে চলত এই চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি কেন্দ্র। বর্তমানে সেখানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৭০। রঞ্জন দাস সরকারি চাকরির প্রস্তুতির ক্ষেত্রে তাঁদের ফ্রেন্ড, ফিলোজফার এবং গাইড হয়ে ওঠেন কিছু দিনেই। নিজে পড়ানোর পাশাপাশি সব রকম সাহায্যও করতেন ওই পুলিশ আধিকারিক। তবে সম্প্রতি চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কর্মরত আধিকারিকদের বদলি হয়। সঙ্গে শেওড়াফুলি ফাঁড়ির অফিসার রঞ্জনকেও বদলি করা হয় চুঁচুড়ায়।
রঞ্জনের বদলির পরই বাধে বিপত্তি। কোচিং সেন্টারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ, তাঁর অনুপস্থিতিতে কোচিং সেন্টারটি বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখনই বাধ্য হয়ে চন্দনগর পুলিশ কমিশনারেটের দ্বারস্থ হন পড়ুয়ারা। সঙ্গে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি ২ (শ্রীরামপুর) এর কাছে স্মারকলিপি জমাও দেন। স্মারকলিপিতে আবেদন করা হয় যাতে প্রস্তুতি কেন্দ্রটি বন্ধ না হয়ে যায়। একইসঙ্গে তাঁদের দাবি, রঞ্জনবাবু যেন কোচিং সেন্টারটি দেখেন। বৈদ্যবাটি পুরসভার তরফেও পুলিশের কাছে একই আবেদন জানানো হয়েছে।
বৈদ্যবাটি পুরসভার চেয়ারম্যান পিন্টু মাহাত জানান, ‘মাধ্যমিক পাশ ছেলে মেয়েরা চাকরির কোচিং নিত। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে শিক্ষককের বেতনটা দেখতাম। গোটা ব্যবস্থাটাই রঞ্জন করত। কয়েকজন চাকরিও পেয়েছে এখান থেকে। এখন অফিসার বদলি হয়ে যাওয়ায় সেন্টারটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিধায়ক ও পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলব যাতে কোচিং সেন্টার চলে।’ অন্যদিকে চন্দননগর পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি জানিয়েছেন, এই কোচিং সেন্টার বদল করা হবে না। যে অফিসার বদলি হয়ে আসবেন, তিনি দেখবেন। পড়ুয়াদের এই নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা না করার পরামর্শও দেন তিনি।