প্রতিরক্ষায় অত্যাধুনিক ভেসেল ব্যবহার করতে চলেছে ভারতীয় নৌসেনা

ভারতীয় নৌসেনাকে শক্তিশালী করতে বড় পদক্ষেপ গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্সের। এবার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শক্তি বাড়াতে চারটি নজরদারি জাহাজের বরাত পেয়েছে গার্ডেনরিচ। প্রতিরক্ষার কাজে  এই অত্যাধুনিক  ভেসেল ব্যবহার করতে চলেছে ভারতীয় নৌসেনা। আর সেই কারণেই  আধুনিক চারটিনেক্সট জেনারেশন অফশোর পেট্রল ভেসেল’ (এজিওপিভি) তৈরি করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার অধিকৃত গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (জিআরএসই) সংস্থা। মঙ্গলবার তারই নির্মাণেরই সূচনা হয় কলকাতার গার্ডেনরিচে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জিআরএসই সংস্থার চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর কমোডোর পিআর হরি (অবসরপ্রাপ্ত)সংস্থার তরফ থেকে দাবি করা হয় যে, ২০২৬ সালে ভারতীয় নৌসেনার হাতে এই চারটি আধুনিক ভেসেল তুলে দেবে সংস্থা। সেগুলি দিয়ে উপকূলে নজরদারি চালাবে নৌসেনা।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, এর আগে বেশ কয়েকটি নজরদারি জাহাজ (অফশোর পেট্রল ভেসেল) তৈরি করে নৌসেনা ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে গার্ডেনরিচ। যেগুলো দিয়ে চলছেশত্রুপক্ষের উপর কড়া নজরদারি। চিনের দাদাগিরি রুখতে এখানেই তৈরি হয়েছে সাবমেরিন বিধ্বংসী রণতরী। ২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আধুনিক ভেসেল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। মূলত উপকূলবর্তী এলাকায় নজরদারি চালানোর জন্য ১১টি নেক্সড জেনারেশন এবং ছটি মিসাইল ভেসেল তৈরি করা সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রক। সেই ১১টি নেক্সড জেনারেশন ভেসেলের মধ্যে চারটি তৈরি করছে জিআরএসই। পুরনো জাহাজগুলোর তুলনায় নতুন প্রজন্মের এই অত্যাধুনিক রণতরী আকারে বেশ কয়েকগুণ বড়। যে কোনও আঘাত প্রতিহত করতে এর সহনশীলতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। ঝড়ঝাপটায় এর খুব একটা ক্ষতি হয় না। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১১৩ মিটার। চওড়ায় ভেসেলটি ১৪.৬ মিটার। ২৩ নটস (ঘণ্টায় প্রায় ৪২ কিলোমিটার) পর্যন্ত গতিতে চলতে পারে আধুনিক এই ভেসেল। ১৪ নটস গতিতে ৮,৫০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত যেতে পারে। ২৪ আধিকারিক, ১০০ জন নাবিক চাপতে পারে এক একটি ভেসেলে।পাশাপাশি জাহাজের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাকেও বিশেষভাবে উন্নত করা হচ্ছে।  থাকছে নয়া প্রযুক্তির কন্ট্রোল সিস্টেম। এছাড়া বিপর্যয় মোকাবিলা, অনুপ্রবেশ আটকানো, জলদস্যুদের দমনের মতো নানা গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে নামানো হবে নতুন প্রজন্মের নজরদারি জাহাজগুলোকে। পাশাপাশি উপকূলে অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করবে তারা। এই ১১টি ভেসেল তৈরি করতে খরচ পড়ছে প্রায় ৯,০০০ কোটি টাকা। উপকূলবর্তী এলাকায় নজরদারি চালানোর পাশাপাশি জলসীমায় টহল, পাচার রোখা, সন্ত্রাস দমনের কাজে ব্যবহার করা হবে ভেসেলগুলি। বিপর্যয়ের সময় উদ্ধারকাজেও নামবে এই এজিওপিভি ভেসেল। জিআরএসইতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করা হবে ভেসেলগুলি। তার ভিতরে থাকবে ১২.৭ এমএম এসআরসিজি (মেশিনগান), একে৬৩র মতো অস্ত্র। শুধু তাই নয়, এতে রয়েছে ক্যামেরাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two + 6 =