মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি। তার আগে বড় সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেল জুনিয়র চিকিৎসকদের। আইনজীবী গীতা লুথরারে পরিবর্তে এবার সুপ্রিম কোর্টে জুনিয়র চিকিৎসকদের জন্য সওয়াল করবেন নতুন আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিংহ।
সূত্রের খবর, শীর্ষ আদালতে গীতা লুথরার সওয়াল জবাবে সন্তুষ্ট ছিলেন না আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আন্দোলনকারীদের দৃষ্টিভঙ্গি ঠিকমতো তুলে ধরা হচ্ছে না। গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি ছিল আরজি কর মামলার। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। কিন্তু রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল একটি বিষয়ে জোর সওয়াল করেন। জুনিয়র চিকিৎসকদের টানা কর্মবিরতিতে সরকারি হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় গত সোমবার পর্যন্ত কত জনের মৃত্যু হয়েছে, সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা এই আন্দোলনের জেরে ব্যাহত হচ্ছে বলে আদালতে জোর সওয়াল করেন কপিল সিব্বল। এরপরই প্রধান বিচারপতি জানান, ‘সকাল বিকাল ৫ টার মধ্যে চিকিৎসকরা কাজে যোগ দিলে, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না রাজ্য।’ এর সঙ্গে প্রধান বিচারপতি এও জানান, ‘যদি এর পরেও তাঁরা কাজে যোগ না দেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।’
কিন্তু রাজ্যের আইনজীবী যখন এই বিষয়টি নিয়ে সওয়াল করেন, সেদিনের শুনানিতে সে অর্থে সলিসিটর জেনারেলন তুষার মেহেতা কিংবা জুনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবী গীতা লুথরা সে ভাবে কোনও পাল্টা যুক্তি খাড়া করতে পারেননি। এদিকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকেও। তিনি অবশ্য জানান, তিনি নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী। তাঁর এখানে সওয়াল করার এক্তিয়ার নেই।
গত দুতিন দিনে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ প্রবল হয়। নবান্নের সভাঘরের মিটিং ভেস্তে যাওয়ার পরও কালীঘাটে যখন আন্দোলনকারীদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল, একটা আশার আলো তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আন্দোলনকারীদের কথায় ‘সব শর্ত মেনে নেওয়ার’ পরও বৈঠক হয়নি। এর মধ্যে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরানোর জন্য় পাল্টা কৌশল নেয় স্বাস্থ্যভবনও। সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয় সেক্ষেত্রেও। এর পাশাপাশি একাধিকবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীকে একাধিকবার আন্দোলনকারীদের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশও স্মরণ করিয়ে দিতে দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে আগামী মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে রাজ্যের কী অবস্থান, তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আবার জুনিয়র চিকিৎসকরা কাজে যোগ না দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে কী নির্দেশ দেয় সেটাও দেখার।