সিআইডির তদন্তের গতি-প্রকৃতি দেখা ভরসা হারাচ্ছেন বিচারপতি বসু

রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের কাজের গতি প্রকৃতি দেখে ভরসা হারালেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এবার তদন্তভার তুলে দেওয়ার চিন্তা সিবিআই-এর হাতে। প্রসঙ্গত,জাল সুপারিশ,জাল নিয়োগপত্র নিয়ে কীভাবে দিনের পর দিন শিক্ষকতা করছিলেন অনিমেষ তিওয়ারি তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠে গেল আদালতে। একইসঙ্গে এ প্রশ্নও উঠল, এর পিছনে কোনও চক্র কাজ করছে কি না সে ব্যাপারেও। এই প্রশ্ন সামনে আসে মুর্শিদাবাদের ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায়। এই মামলায় তদন্তভার তুলে দেওযা হয়েছিল রাজ্য় গোয়েন্দা দফতর অর্থাৎ সিআইডি-র হাতে। এরপর ওই শিক্ষক গ্রেফতার হলেও বুধবার রাজ্যের গোয়েন্দা দফতরের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেল বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুকে। এরই পাশাপাশি সিবিআই-এর হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়ার ইঙ্গিতও দেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদের সুতির গোঠা হাইস্কুলে অনিমেষ তিওয়ারি নামে এক শিক্ষকের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ভুয়ো নথি দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষকের বাবা আবার ওই গোঠা হাইস্কুলেরই প্রধান শিক্ষক। সেই মামলায় শিক্ষকের বাবাকে আগেই গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয় অনিমেষকেও।
তবে তদন্তে আগ্রগতিতে খুশি নন বিচারপতি। বুধবার এই মামলার শুনানির পর আদালত নির্দেশ দেন যে, রাজ্যের ডিআইজি সিআইডি হাজিরা দিতে হবে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সশরীরে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁকে। এদিকে এদিন বিচারপতি খোঁজ করলে জানতে পারেন সিআইডি-র কোনও আধিকারিক আদালতে উপস্থিত হননি। এরপরই তিনি জানতে চান, কেন রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের কোনও আধিকারিক কেন নেই আদালতে সে ব্য়াপারেও।
এরই প্রত্যুত্তরে রাজ্যের তরফে জানানো হয়,গঙ্গারামপুরে তদন্তের কাজে গিয়েছেন সিআইডি আধিকারিকরা। এরপর বিচারপতি প্রশ্ন করেন,ভুয়ো নিয়োগের সন্ধান পাওয়ার পরও কীভাবে তাঁদের বেতন দিচ্ছে ট্রেজারি তা নিয়েও। এমন শিক্ষকের আসল সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে এমন আশঙ্কাও এদিন প্রকাশ করতে দেখা যায় বিচারপতিকে। আর এই সংখ্যা খুজে বের করতেই সিআইডি-কে তদন্তভার দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি। বিচারপতি বসুর মতে, এই ধরনের নিয়োগের পিছনে একটা চক্র কাজ করছে। তার খোঁজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সিআইডি-কে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘সিআইডি-র ওপর ভরসা-বিশ্বাস হারাচ্ছি। আমি রাজ্যের সংস্থার ওপর ভরসা করেছিলাম। কিন্তু মোহভঙ্গ হচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − three =