মন্দারমণিতে ১৪০টি হোটেল, রেস্তোরাঁ ভেঙে ফেলতে হবে, এমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক।এই নির্দেশের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হলেও জেলাশাসকের নোটিস নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন মন্দারমণির ব্যবসায়ীরা। তাঁরাও হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে মামলা করেন কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার সেই মামলায় কী হয়, সেদিকে তাকিয়ে ছিলেন তাঁরা। অবশেষে সেই মামলায় স্থগিতাদেশ দিল আদালত। অর্থাত, আপাতত ভাঙা যাবে না মন্দারমণির কোনও হোটেল।
পরিবেশ আদালতের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে ১৪০টি হোটেল ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক। শুক্রবার ছিল সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানি। এদিনের শুনানির পর বিচারপতি অমৃতা সিনহা যে নির্দেশ দেন তাতে আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত হোটেল ভাঙার উপর অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ থাকছে। অর্থাৎ ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত হোটেলগুলির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। আগামী ১০ ডিসেম্বর ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।
হোটেল মালিকদের তরফে আদালতে সওয়াল করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশ্ন ওঠে, ১৯৯৯ সালের নির্দেশের পর, এখন কেন হোটেল ভাঙার কথা বলা হচ্ছে? আইনজীবী বলেন, ‘কমিটির যদি কোনও ক্ষমতা না থাকে বন্ধ করার, তাহলে সে কি পারে ভেঙে ফেলতে? সেখানে একটা শিল্প চলছে। পর্যটন শিল্প।’ এই পলিসি ‘দূষিত’ বলে উল্লেখ করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এও বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশে এমন বুলডোজার পলিসি নেওয়া হয়।’
এরপরই বিচারপতি হোটেল মালিকদের কাছে জানতে চান, তাঁদের কোনও রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে কি না। এরই পাশাপাশি কোনও পদক্ষেপ করা হয়েছে, কি না, সেটাও জানতে চান তিনি।হোটেল মালিক সংগঠনের নেতা চিত্তরঞ্জন দাস জানান, তাঁদের নোটিস বারবার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সীমারেখা কোথায়, সেটা জানানো হয়নি। দীর্ঘ ১৫–২০বছরধরেউত্তরনাআসায়ব্যবসাচালিয়েযাচ্ছেনতাঁরা। তবে এদিনের এই নির্দেশেআপাততস্বস্তিপেলেনহোটেলব্যবসায়ীরা।
এদিকে, আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গ্রিন ট্রাইব্যুনাল একটি কমিটি তৈরি করেছিল একটি আগেই। তবে তাঁর দাবি, ট্রাইব্যুনালে ৬ জন থাকা উচিত, কিন্তু এ ক্ষেত্রে ৫ জন ছিলেন, যা আইনি নয়। এছাড়া, আইনজীবীর বক্তব্য, কোনটা ভাঙতে হবে সেটা ট্রাইব্যুনালই ঠিক করবে। এক্ষেত্রে কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটাও ঠিক নয়। তাঁর মতে, একটিও বেআইনি নির্মাণ হয়নি। তিনি বলেন, ‘যখন হোটেল তৈরি হয়েছে, তখন আইনটাই ছিল না, তাই এই নোটিসের কোনও বৈধতা নেই।’