অভিষেকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলা ছাড়লেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ

অভিষেকের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা ছাড়লেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। এই মামলায় এফআইআর খারিজের আর্জি জানিয়েছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার পর্যন্ত তাঁকে রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছিল। এবার সেই মামলা ছেড়ে দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। কোন এজলাসে শুনানি হবে, তা স্থির করবেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। মামলা নির্দিষ্ট না করা পর্যন্ত অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না বলেও নির্দেশ দেয় আদালত। কেন বিচারপতি ঘোষের এজলাসে নিয়োগ সংক্রান্ত এই মামলা উঠল, তা নিয়ে এদিন প্রশ্ন তোলে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। ইডির তরফে সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু সওয়াল করেন, সব নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা হওয়া উচিত বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, সৌমেন নন্দী মামলা বা নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি সিনহার বেঞ্চে ফিরিয়ে দিয়েছিল।এরপরই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘তাহলে মামলা আমি ছেড়ে দিচ্ছি। প্রধান বিচারপতি সিদ্ধান্ত নিক কোন আদালতে মামলা হবে।’ পাল্টা অভিষেক মনু সিংভি জানান, ‘সিআরপিসি ৪৮২ অনুযায়ী মামলা করেছেন অভিষেক। এই মামলা শোনার ভার আপনার কোর্টে। ফোরাম শপিং করা হচ্ছে ইডি তরফে। ১০ জুলাই নির্দেশ স্পষ্ট সিআরপিসি ৪৮২ আইনি পথের কথা বলা হয়েছে। পরামর্শ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাহলে এই লুকানোর চেষ্টা কেন ইডির। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে আমি যুক্ত নই। মামলায় সরাসরি কোনও ভাবে যুক্ত নই। তাহলে ইডি এমন ভাবে অন্য কোর্ট দেখিয়ে মামলা এড়াতে চাইছে কেন। বিচারপতি’র এমন চাপের মামলা সামলানোর যথেষ্ট দক্ষতা আছে।’ এরই প্রেক্ষিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির জামিনের আবেদন, এফআইআর খারিজের আবেদন গুলি কোন কোর্ট শুনবে? বিচারপতি অমৃতা সিনহা বেঞ্চ? যদি ইডি উত্তর হয় হ্যাঁ, তাহলে প্রধান বিচারপতি কাছ থেকে বিচার্য মামলা নিয়ে পরামর্শ চাইব।’

অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা মামলা পিছোতে চাইছে। তাই, দীর্ঘসূত্রতিতায় মামলাকে পাঠানোর জন্যই এমন কৌশল ইডির। মানিক ভট্টাচার্যের জামিনের আবেদনের শুনানি এই বেঞ্চেই হয়। সেই সময়ও একই রকম যুক্তি ছিল ইডির। সুজয় ভদ্রের প্যারোল সহ আবেদনের শুনানি হয় এই বেঞ্চে। মামলাকারী নাম পরিবর্তনের সঙ্গে ইডি অবস্থান বদলে যায়। ৮ অগাস্ট আমেরিকা চিকিৎসকের ভিজিট স্থিরর হয়েছে। ২৬ জুলাই থেকে ২০ অগাস্ট মধ্যে তাই সময় চেয়েছি। অভিষেকের রক্ষাকবচের মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। এই রক্ষাকবচ বাড়ানো হোক।’

প্রসঙ্গত, কুন্তল ঘোষের বিতর্কিত মন্তব্যের পরই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হলেও ইডি-র মুখোমুখি হননি তিনি। হাজিরা এড়িয়ে গিয়ে আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলায় শীর্ষ আদালত রক্ষাকবচ দেয়নি। এরপর বিচারপচি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে সেই মামলা ফিরলে, তিনি নির্দেশ দেন, অভিষেকের বিরুদ্ধে এফআইআর করে তদন্ত করতে পারবে ইডি। সেই এফআইআর খারিজের আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন অভিষেক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 5 =