একুশের জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের মহা সমাবেশ। তৃণমূলের শহিদ দিবসে এবার রেকর্ড জনসমাগম করতে চায় জোড়াফুল শিবির। সেই কারণে সমাবেশে যোগ দিতে ইতিমধ্যেই রাজ্যের সমস্ত জেলা থেকে শহরে আসতে শুরু করেছেন জোড়াফুলের সমর্থকেরা। প্রতিবছর একুশে তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষে হাজার হাজার লোক জড়ো হন এই কলকাতায়। এই এত হাজার লোকের জন্য ভিড় ও ট্রাফিক সামলাতে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে।
কারণ, একুশে ট্রাফিকের সঙ্গে কলকাতা পুলিশের মাথা ব্যথা থাকে জেলা থেকে শহরে আসা যানবাহনগুলি নিয়ে। কারণ, সভায় যোগ দিতে শহরে আসা সমর্থকেরা জেলা থেকে বাস,ক্যারাভান,ট্রাক ভাড়া করে কলকাতায় আসেন। সেই গাড়িগুলোর পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করাই সবথেকে বড় সমস্যার। সঙ্গে থাকে ভিআইপি ব্যক্তিত্বের সমাবেশ। তাঁদের কনভয়কেও জায়গা দেওয়ায় ট্রাফিক পুলিশের কাছে সর্বপ্রথম কাজ।
আর সেই কারণেই কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের তরফ থেকে জেলা থেকে আসা গাড়িগুলির জন্য জেলার ভিত্তিতে ভাগ করে পার্কিংয়ের জায়গা নির্ধারণ করে থাকে। কারণ, জোনের ভিত্তিতে ভাগ করলে এতে কোনওরকম সমস্যা বা বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে না বলেই দাবি কলকাতা পুলিশের। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার সভার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট নেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে পার্কিং স্টিকার। সেই স্টিকারে জেলার নাম, গাড়ির নাম্বার, ড্রাইভারের নাম এবং ফোন নম্বর লেখা থাকবে। র্যালিতে আসা প্রত্যেক গাড়িতে লাগাতে হবে ওই স্টিকার এবং জেলা হিসেবে নির্দিষ্ট জায়গাতেই রাখতে হবে গাড়ি। এছাড়া কেউ রাস্তা হারিয়ে ফেললে তাঁকে ঠিক কোন দিকে যেতে হবে তা বোঝাতেও পুলিশের সুবিধা হবে।
কলকাতা ট্রাফিক সূত্রে খবর, ২১ জুলাই জেলা থেকে আসা গাড়িগুলিতে শহরে প্রবেশের সময়ই সেঁটে দিতে হবে পুলিশের দেওয়া স্টিকার। এরফলে ধর্মতলায় পৌঁছনোর সময় জেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়িগুলিকে পার্কিংয়ের জন্য পাঠাতে সুবিধা হবে। এই প্রসঙ্গে কলকাতা ট্রাফিকের কর্মরত এক পুলিশ আধিকারিক জানান,ধর্মতলায় সমাবেশ স্থানের আশপাশে মোট পাঁচটি জায়গা পার্কিং লট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পার্ক স্ট্রিট মেট্রোর বিপরীতে টিএআই গ্রাউন্ড, গঙ্গা সাগর মেলা গ্রাউন্ড, ইডেন গার্ডেনের পাশে বঙ্গবাসী গ্রাউন্ড,হেস্টিংস পার্কিং লট ও বাটা ক্লাবের কাছে জেলা থেকে আসা ভাড়ার বাস,গাড়ি,ভ্যান,ম্যাটাডোর রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া শহর থেকে আসা গাড়িগুলিকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে বিটি রোড ও ইএম বাইপাসে।
এদিকে লালবাজার সূত্রে খবর, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার ৩১ জন অফিসার রাস্তায় থাকছেন একুশে জুলাইয়ের জন্য। পাশাপাশি যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার ৮ জন অফিসার এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার ৮০ জন অফিসার থাকবেন। পাশাপাশি বহুতল বিল্ডিংগুলির ছাদ থেকেও নজরদারি চালাবে পুলিশ। ২০টি ছাদ বেছে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১৮টি অ্যাম্বুল্যান্স, ৪৮টি কিয়স্ক প্রস্তুত রাখা হবে বলে খবর। একইসঙ্গে প্রস্তুত থাকছে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের ৪টি দল এবং কুইক রেসপন্স টিমের ৬টি দলও।