মানিকতলা বিধানসভার প্রার্থী সুপ্তি না শ্রেয়া, জল্পনা তুঙ্গে

১০ জুলাই উপনির্বাচন মানিকতলা, রায়গঞ্জ, বাগদা ও রানাঘাট দক্ষিণে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যে উপনির্বাচন নিয়ে সরগরম রাজনৈতিক মহল। তবে এই উপনির্বাচন ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে চিঠি গেছে নির্বাচন কমিশনে। কেন তড়িঘড়ি চার কেন্দ্রে ভোট, প্রশ্ন শাসকদলের। কারণ, কিছুদিন পরই আরও ৬ কেন্দ্রে উপনির্বাচন করতে হবে। রাজ্য এইভাবে নির্বাচনের মরসুম চলতে থাকলে প্রশাসনিক কাজে ব্যাঘাত ঘটে। এই অভিযোগগুলিকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি দেওয়া হয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে। সঙ্গে এ দাবিও জানানো হয়, রাজ্যে ১০ কেন্দ্রে একসঙ্গে বিধানসভা উপনির্বাচন হোক।

এবার যে চার কেন্দ্রে ভোট হতে চলেছে, তার মধ্যে মানিকতলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী খোদ কোর কমিটি গড়েছেন। এই কোর কমিটি গড়ার ক্ষেত্রে সোমবার উত্তর কলকাতার চার গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে নবান্নে ডেকে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী । সেখানে ছিলেন কুণাল ঘোষ, তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ এবং মেয়র পরিষদ স্বপন সমাদ্দার । ভোটের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য এই চারজনের কোর কমিটি গড়ে মানিকতলা জয়ের দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, সদ্য লোকসভা নির্বাচনে মানিকতলায় আশানুরূপ ফল হয়নি শাসকদলের । জোড়াসাঁকো বা শ্যামপুকুরের মতো পরাজয়ের মুখ দেখতে না হলেও জয়ের ব্যবধান ছিল মাত্র ৩ হাজার ৫৭৫ ভোটের। এই আবহে দলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণ ঠিক না করলে যেকোনও সময়ে এই স্বল্প ব্যবধান ছাড়িয়ে যাবে বিরোধী পক্ষ ৷ ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, বিষয়টা বুঝে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কোর কমিটির এই চার নেতাই ভোটে মানিকতলা নির্বাচন কমিটির দায়িত্ব সামলাবেন। এই ঘটনা অভূতপূর্ব সন্দেহ নেই। কিন্তু মানিকতলা নিয়ে এত তৎপরতার জল্পনা শুরু হয়েছে কেন্দ্রে সম্ভাব্য তৃণমূল প্রার্থী কে হতে চলেছেন তা নিয়ে। এই চর্চায় সবার আগে আসছে সুপ্তি পাণ্ডের নাম। প্রয়াত বিধায়ক সাধন পাণ্ডের স্ত্রী তিনি। প্রার্থিপদের দাবিদার রয়েছেন সাধন পাণ্ডের মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডেও। অনেকে আবার মনে করছেন, পাণ্ডে পরিবারের কেউ না হয়ে তৃতীয় কোনও ব্যক্তি হতে পারেন এই কেন্দ্রে প্রার্থী। রাজ্যের এক বড় আমলার নাম নিয়েও চলছে চর্চা। তবে জোরালো সুপ্তি পাণ্ডের নাম।

অন্যদিকে বাগদা কেন্দ্রে লোকসভা ভোটের নিরিখে তৃণমূল পিছিয়ে আছে ১৮ হাজার ভোটে। ফলে এই কেন্দ্রে কি বিশ্বজিৎ দাসের উপরই আস্থা রাখবে দল তা নিয়ে জল্পনা চরমে। অন্যদিকে রায়গঞ্জে কৃষ্ণ কল্যাণী লোকসভা নির্বাচনে পিছিয়ে আছেন। সম্প্রতি লোকসভা প্রার্থী হয়েও হেরেছেন। ফলে দল  আবার তাঁকে বিধানসভার টিকিট দেবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্নচিহ্ন। পাশাপাশি রানাঘাট কেন্দ্রে মুকুটমণি অধিকারী এবার বিধানসভার টিকিটে লড়বেন কি না তা নিয়েও চলছে বিস্তর আলোচনা। কারণ, রানাঘাটের প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর লোকসভায় টিকিট পান এবং হারেন। আবার তাঁকেই প্রার্থী করবে কি না তৃণমূল রয়েছে প্রশ্ন। তৃণমূলের একাংশ মনে করছে বিশ্বজিৎ, মুকুটমণি, কৃষ্ণ কল্যাণীরা আবারও টিকিট পেতেই পারেন। তবে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কিছু নেওয়া হয়নি। সূত্রের খবর, জেলা নেতৃত্বের কাছ থেকে রিপোর্ট নিয়ে তবেই নাম চূড়ান্ত করবে তৃণমূল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − sixteen =