গণধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিতার গোটা শরীরে তৈরি হয়েছে একাধিক ক্ষত। কসবা ল’ কলেজের নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্টে মিলেছে এমনই তথ্য।
প্রসঙ্গত, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর পর ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে মেডিক্যাল টেস্ট হয় নির্যাতিতার। আর এই রিপোর্টেই লেখা রয়েছে একাধিক ক্ষতের কথা। ন্যাশনাল মেডিক্যাল সূত্রে খবর, নির্যাতিতার গলায় কামড়ের দাগ মিলেছে। বুকে রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। গোপনাঙ্গেও রয়েছে সামান্য ক্ষত। এছাড়া গোটা শরীরের নানা অংশে রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। রয়েছে নখের আঁচড় ও কালশিটের দাগ। এর পাশাপাশি কলেজের ভিতরে আটকে রেখে কী ভাবে অত্যাচার করা হয়েছে। আর নির্যাতিতা তা বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছেন চিকিৎসকের কাছেই।
২৫ জুন, বুধবার সন্ধ্যার পরে কলেজের মধ্যেই দফায় দফায় ওই ছাত্রীকে হেনস্থা করার পর আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। প্রধান অভিযুক্ত প্রাক্তন ছাত্র মনোজিৎ মিশ্র বর্তমানে ওই কলেজেরই অস্থায়ী কর্মী। দুই বর্তমান ছাত্রও এই ঘটনায় জড়িত। এই তিন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করেছে কসবা থানার পুলিশ। আলিপুর আদালত ওই তিন অভিযুক্তকে চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে ওই নির্যাতিতা জানিয়েছেন, ধর্ষণে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাঁকে। তিনি পত্রপাঠ নাকচ করতেই বুধবার সন্ধেয় ইউনিয়ন রুম থেকে বেরোনোর সময় মনোজিৎ মিশ্র ওই ছাত্রীকে বাধা দেয়। ধর্ষণে সহযোগী দুই ছাত্র মনোজিতের ইশারায় বাইরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। সে সময়ে ওই ছাত্রীকে শৌচাগারের কাছে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে মনোজিৎ। বাধা দেওয়ার অনেক চেষ্টা করেন ওই ছাত্রী। এই ঘটনায় প্যানিক অ্যাটাক, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায় তাঁর। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাকুতি–মিনতি করলেও তাতে পাত্তা দেয়নি মনোজিৎ। বাকি দুই অভিযুক্তকে দিয়ে ইনহেলার আনিয়ে ছাত্রীকে দেয় সে। সামান্য সুস্থ হয়েই ফের ওই ছাত্রীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মনোজিৎ ।
নিগৃহীতা ছাত্রী জানিয়েছেন, বাধা দিলে প্রেমিককে খুন করে দেওয়া হবে এবং বাবা–মাকে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয় মনোজিৎ। এছাড়াও জোর করে তাঁকে বিবস্ত্র করে সেই ভিডিয়ো এবং ধর্ষণের ভিডিয়ো রেকর্ড করে বাকি দুই ছাত্র। ওই রেকর্ডিং ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখানো হয় নির্যাতিতাকে। বাধা দেওয়ায় আঘাত করা হয়। এমনকী হকি স্টিক দিয়ে মারার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগে জানিয়েছেন নির্যাতিতা। তাঁর মেডিক্যাল টেস্টেও উঠে এসেছে গোটা শরীরে নৃশংস নির্যাতনের একাধিক চিহ্ন।