উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে মহম্মদ আখালখকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল গো মাংস খাওয়ার সন্দেহে। গোরু পাচার করছে এই অভিযোগে গত বছর হরিয়ানায় একটি গাড়ির মধ্যে দুই মুসলিম যুবককে পুড়িয়ে মারা হয়। এবার গো মাংস খাওয়ার সন্দেহে বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিককে পিটিয়ে মারা হল হরিয়ানায়। মৃতের নাম সাবির মল্লিক। গত ২৭ অগাস্ট ঘটনাটি ঘটে হরিয়ানার চরখি দাদরি জেলায় ভান্ধারা গ্রামে। পুলিশ সূত্রে খবর, নিহতের বাড়ি বসন্তীতে। ওই ঘটনায় পুলিস ২ নাবালক-সহ মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সূত্রে খবর মিলছে, সাবির মল্লিকের বাড়ি বাসন্তীতে। হরিয়ানায় প্লাস্টিক কুড়োনোর কাজ করত সাবির। পুলিশের তদন্তে নেমে জানতে পারে, অভিযুক্তরা সাবিরকে প্লাস্টিকের বোতল বিক্রি করবে বলে ডেকে আনে। তার পরেই তাকে বাঁশ, কাঠ দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। ওসব দেখেই স্থানীয়রা চলে আসেন। তখন সাবিরকে অভিযুক্তরা অন্য জায়গায় নিয়ে চলে যায়। সেখানেই তার আর এক দফা মারধর করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সাবিরের। অভিযুক্ত অভিষেক, মোহিত, রণবীর, কমলজিত ও সাহিলের দাবি, সবির গো মাংস খেয়েছে।
নিহত সাবিরের বাবার দাবি, পুলিশে অভিযোগ জানানো সত্বেও হরিয়ানা পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিষয়টি তিনি বাসন্তী পুলিশকে জানিয়েছেন। ঘটনার তদন্তে সম্ভবত বাসন্তী পুলিশের একটি দল হরিয়ানা যেতে পারে। সাবিরের বন্ধু সুজাউদ্দিন জানান, ‘আমাদের এলাকায় গো মাংস নিষিদ্ধ ছিল। তাই আমরা গো মাংস খেতাম না। মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে।’
বাংলার শ্রমিককে পিটিয়ে মারা নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘হরিয়ানায় এক বাসিন্দাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে আমাদের রাজ্যের। গো-মাংস ভক্ষণের অভিযোগে পিটিয়ে মেরে ফেলা হল। দেশে একাধিক খাদ্যাভাস আছে। যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। কে কী খাবেন। এই রাজ্যে গণতন্ত্র আছে বলেই তো সবাই নানা আন্দোলন করতে পারছেন৷ এবার বাকিদের দিকে দেখুন। হরিয়ানায় এই মারা যাওয়া নিয়ে জাস্টিস চাওয়া হবে না?’
গত ১০ বছর হরিয়ানায় একের পর এক তাণ্ডব চালিয়েছেন গো রক্ষকরা। গত বছরও রাজস্থানের ২ মুসলিম যুবককে অপহরণ করে গো রক্ষকরা। তারপর একটি গাড়ির মধ্যে নাসির ও জুনেইদ নামে ওই দুই যুবকের দগ্ধ দেহ পাওয়া যায়। হরিয়ানার ভিওয়ানি জেলায় লোহরুতে তাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ২০১৬ সালের মে মাসে ঝাড়খণ্ডে ২ মুসলিম মোষ ব্যবসায়ীকে গাছে ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে মারা হয়। ওই দুজনের মধ্যে ১৫ বছরের এক কিশোরও ছিল।