দুধ চা না লিকার চা কোনটা বেশি উপকারী

যেখানেই যান না কেন, চা খাওয়ার একটা প্রস্তাব আসবেই। তাতে সম্মতি জানালেই পরের প্রশ্ন, দুধ চা না লিকার?

এই দুধ চা আর লিকার চায়ের লড়াইটা শুরু হয়েছে বহুকাল ধরেই। বাঙালি যত স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হয়েছে, ততবেশি সামনে আসা শুরু হয়েছে এই প্রশ্নের। এখন সমস্যা হল, এই দুই ধরনের চায়ের মধ্যে কোনটি বেশি উপকারী, এই বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। এই প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদদের বক্তব্য, চা অত্যন্ত উপকারী একটি পানীয়। কারণ, চায়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর সেই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কিন্তু প্রদাহ প্রশমিত করার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া চায়ে উপস্থিত কিছু উপকারী উপাদানের গুণে মুড চাঙ্গা থাকে কঠিন দিনেও। এমনকী কাজে মন বসাতেও সাহায্য করে। সমস্যা একেবারে গোড়ায়। তবে লিকার চা না দুধ চা, কোনটা খাওয়া বেশি উপকারী এ সম্পর্কে পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, চা খেয়ে উপকার পেতে চাইলে আপনাকে লিকার চা-ই খেতে হবে। কারণ,  চায়ে যে সব উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তা দুধের সংস্পর্শে এলেই গুণগুলো হারিয়ে ফেলে। ফলে এই পানীয় খেয়ে তেমন কোনও উপকারই মেলে না। আর গ্রিন -টি এর ক্ষেত্রে তো দুধ ‘নৈব -নৈব চ’।

এদিকে এখনও আমাদের মধ্যে অনেকেই ফ্যাট যুক্ত দুধ দিয়ে চা তৈরি করেন। আর দুধে উপস্থিত এই ফ্যাটই কিন্তু সরাসরি ওজন বাড়ায়। এমনকী দেহে খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধিরও কাজ করে বেশ সুন্দর ভাবে। তাই দুধ চা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। বরং এর বদলে লিকার চা খান সকাল-বিকেল। এছাড়া যাঁরা একদমই দুধ চা না খেয়ে থাকতে পারেন না, তাঁরা ফ্যাট লেস দুধের চা পান করুন।

পাশাপাশি পুষ্টিবিদরা এও জানাচ্ছেন, খালি পেটে দুধ চা খাওয়া উচিত নয়। কারণ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, খালিপেটে দুধ চা খাওয়ার কারণে পেট ব্যথা, গ্যাস এবং অ্যাসিডিটির মতো জটিল অসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই যেভাবেই হোক, সকালে উঠে খালিপেটে দুধ চা খাওয়ার সমস্য়া হতে পারে। বরং দিনের শুরুতে লিকার চা খাওয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এতে পেট ও শরীর- দুইই চাঙ্গা থাকবে।

একইসঙ্গে ছাড়তে হবে চায়ে চিনি মিশিয়ে খাওয়ার এই অভ্য়াসও। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত চিনি খেলে সুগার, কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এমনকী বাড়তে পারে ওজনও। তাই চিনির থেকে নিরাপদ দূরত্ব রাখাই শ্রেয়। তবে আজকাল অনেকেই চিনির বদলে সুগার ফ্রি খান। তবে এই মিষ্টি খাবারও শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। তাই মিষ্টি ছাড়াই চা খাওয়া অভ্যাস করুন। এর এতেই রোগভোগের আশঙ্কা কমবে।

বেশি পরিমাণে চা খেলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি, বদহজম থেকে শুরু করে অনিদ্রা, উৎকণ্ঠার মতো সমস্যাও পিছু নিতে পারে। তাই দিনে ৩ কাপের বেশি চা পান করা একবারেই উচিত নয়। তাই সাবধান থাকাটা খুবই জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − four =