টেস্ট অ্যাটলাস নামে এক সংস্থার বিচারে সম্প্রতি ভারতের তিনটি ডেজার্ট বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করে ফেলেছে। গোটা বিশ্বের সেরা ৫০টি সুস্বাদু ডেজার্টের মধ্যেই ১৪ নম্বর স্থানে রয়েছে মাইসোর পাক। ১৮ নম্বরে রয়েছে কুলফি এবং ৩২ নম্বরে কুলফি ফালুদা।
মাইসোর পাক একটি প্রাচীণ এবং রাজকীয় ডেজার্ট। মাইসোর প্যালেসের রান্নাঘরেই প্রথম তৈরি হয়েছিল এই মিষ্টি। কর্নাটকের বাসিন্দারা যতই এই নিয়ে গর্বিত হোক না কেন তামিলনাড়ুর মানুষও কিন্তু ছেড়ে কথা বলতে রাজি নয়। তাঁদের দাবি, কর্নাটক নয়, মাইসোর পাকের জন্ম তামিলনাড়ুতেই। চুরি করে মাইসোর প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এই মিষ্টির রেসিপি।
মাইসোরের মহারাজা চতুর্থ কৃষ্ণ রাজা ওয়াদিয়ার খাদ্যরসিক মানুষ ছিলেন। তাঁর আমলে অম্বা বিলাস প্যালেসে বিশাল রান্নাঘর ছিল। সকাল-বিকেল সেখানে দেদার খানা পিনার আয়োজন করা হত। রাজার মনপসন্দ খাবার তৈরি হতো হেঁশেলে।অম্বা বিলাস প্যালেসের হেঁশেলের রাঁধুনি কাকাসুর মদপ্পা রাজার জন্য প্রায়ই নানারকম মিষ্টি তৈরি করতেন।রাজামশাইকে খুশি করতে একবার ঘি, ময়দা, চিনি দিয়ে একটি নরম পাকের মিষ্টি তৈরি করেন তিনি। খেয়ে বেজায় খুশি রাজামশাই। তৎক্ষণাৎ রাজদরবারে ডাক পড়ল রাঁধুনি মদপ্পার। তাঁকে প্রশ্ন করা হল, এ মিষ্টির নাম কী? তাঁর মাথায় এল ‘মাইসোর পাক’। তারপর থেকে সুস্বাদু এই মিষ্টির নাম হয়ে গেল মাইসোর পাক। রাজামশাই এতটাই প্রসন্ন হলেন, প্যালেসের বাইরে কাকাসুরা মদপ্পার জন্য একটি মিষ্টির দোকান তৈরি করে দিলেন। সেই থেকেই মাইসোর পাক কর্নাটক তথা গোটা দেশে বিখ্যাত হয়ে উঠল।এখন তার খ্যাতি পৌঁছাল বিশ্বের দরবারেও।
সম্প্রতি সেই টেস্ট অ্যাটলাসের তরফে বিশ্বের সেরা ৫০টি মিষ্টির তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তার মধ্যে ভারতের তিনটি মিষ্টি দেখে উচ্ছ্বসিত সুইটলাভাররা। ভারতের পাশাপাশি মিষ্টির তালিকায় রয়েছে, ব্রিটেন, জার্মানি, স্পেন, আর্জেন্টিনা, আমেরিকা, চিন, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা, কোরিয়া এমনকি শ্রীলঙ্কার মিষ্টিও। তালিকায় যে মিষ্টিগুলি প্রথম পাঁচে রয়েছে সেগুলি হল, পর্তুগালের প্যাস্টেল ডি নাটা, ইন্দোনেশিয়ার সেরাবি, তুরস্কের ডোনডুর্মা, দক্ষিণ কোরিয়ার হট্টেক এবং থাইল্যান্ডের পা থং কো।