খোঁজ নেই পুতিনের, প্রশ্ন উঠল সামরিক অভ্যুত্থানের মুখোমুখি রাশিয়া কি না তা নিয়ে

কোথায় গেলেন পুতিন! মস্কোর সময় অনুসারে শনিবার বেলা ২ টা ১৬মিনিটের পর থেকে তিনি ঠিক কোথায় তার সঠিক তথ্য দিতে পারছে না কেউই। এদিকে সূত্র মারফৎ খবর মিলছে যে, পুতিন নাকি এই মুহূর্তে মস্কো ছেড়েছেন। সুরক্ষার কথা চিন্তা করেই এই পদক্ষেপ করেছেন পুতিন। আর এখানেই প্রশ্ন উঠে গেছে, এবার কি তবে সামরিক অভ্যুত্থানের মুখোমুখি রাশিয়া!

সূত্রের খবর, পুতিনের বিমান এদিন মস্কো থেকে উড়েছিল তবে তা কোথায় যাচ্ছে তা জানা ছিল না কারও। মস্কোর সময় অনুযায়ী ২টো ১৬ মিনিটে পুতিনের বিশেষ বিমান আইআই ৯৬-৩০০পিইউ (Il96-300PU) বিমানটি মস্কো থেকে সেন্ট পিটারবার্গের দিকে ওড়ে। তবে তার গতিপথ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা ছিল না কারও। এদিকে এ সম্পর্কে মুখ খোলেনি রাশিয়ান সংবাদ মাধ্যমও। এদিকে পুতিনকে নিয়ে এমনিতেও একাধিক জল্পনা শোনা যায়। তাঁর মতো দেখতে একাধিক ডামি পুতিন রয়েছে, এই গুঞ্জনও নেহাত নতুন নয়।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণার পরেই বিশ্বের একাধিক দেশের কুনজরে পড়ে রাশিয়া। কিন্তু, এবার ভাড়াটে সেনার দল ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন সরাসরি রাশিয়ার উপর হামলা চালাতে পালটা হুংকার দিয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনও। বলেন, ‘যা ঘটেছে তা পুরোপুরি পিঠে ছুরি বসানোর মতো। আর এর জন্য ওদের শাস্তি পেতেই হবে। বিদ্রোহী সেনাকে আমরা জবাব দেব।’

এদিকে ইয়েভজেনি প্রিগোজিন যখন পুতিনকে গদিচ্যুত করার বার্তা দিচ্ছে সেই সময় রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ঠিক কোথায়? তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। তবে শনিবার পুতিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে ‘ওয়াগনার গ্রুপ’-এর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনকে বিশ্বাসঘাতক বলে উল্লেখ করেন। একইসঙ্গে প্রিগোজিন ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যই সশস্ত্র বিদ্রোহ ঘটিয়েছে বলে দাবি করেন পুতিন। সঙ্গে এও জানান, এই ঘটনা রাষ্ট্রদ্রোহের সমান। যাঁরা এই সময় রুশ সেনার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবে তাঁদের কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে বার্তাও দেন পুতিন। একইসঙ্গে ‘ওয়াগনার গ্রুপ’-এর এই বিদ্রোহ ঘোষণার মুহূর্তে সমস্ত দেশবাসীকে এক হওয়ার বার্তাও দিতে দেখা যায় পুতিনকে। সঙ্গে হুঁশিয়ারির সুরে জানান, কোনওভাবেই গৃহযুদ্ধ বরদাস্ত করা হবে না। উল্লেখ্য, এই গোটা ঘটনায় ইউক্রেনের কলকাঠি নাড়ার ইঙ্গিত পাচ্ছেন পুতিনপন্থিরা। তাঁদের একাংশের দাবি, এর আগেও পুতিনকে মেরে ফেলার চক্রান্ত হয়েছিল। এই গৃহ-যুদ্ধ লাগানোর জন্যও জেলেনেস্কিকেই দায়ী করছেন তাঁদের একাংশ।

এদিকে শনিবারই ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন দাবি করেন, তাঁর বাহিনী রাশিয়ার রোস্তভ-অন-ডন ও ভোরোনেজ এই দুটি শহর এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। একই সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পুতিনকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জানান, রাশিয়া শীঘ্রই নতুন প্রেসিডেন্ট পেতে চলেছে।

এখানে আরও একটা তথ্য দিয়ে রাখতেই হয়। ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে মাস খানেক ধরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সঙ্গে মতবিরোধ চলছিল প্রিগোজিনের। রুশ সেনা পরিকল্পিত ভাবে‌ ওয়াগনার যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে শনিবার পুতিনের দফতর ওয়াগনার প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ওয়াগনার বাহিনীর এই অভিযানকে সশস্ত্র বিদ্রোহ বলে ঘোষণা করা হয় এবং ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনির গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 1 =