প্রধানমন্ত্রীর জঙ্গি খোঁচার তীক্ষ্ণ জবাব রাহুল-মহুয়ার

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জঙ্গি-খোঁচার তীক্ষ্ণ জবাব দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। কেন্দ্রের বিজেপি-বিরোধী জোটকে মোদির বিদ্রুপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাহুল টুইটে বলেন, ‘আমরা মণিপুরকে শান্ত করার কাজ চালিয়ে যাব। উত্তর-পূর্বের রাজ্যে ইন্ডিয়া নামের ধারণাই বদলে দেব। আপনি আপনাদের যে নামেই ডাকুন, মোদিমশাই, আমরা ইন্ডিয়া (আইএনডিআইএ)। মণিপুরের শিশু ও মহিলাদের চোখের জল মোছাব। সব মানুষের জন্য আমরা প্রেম ও শান্তি ফিরিয়ে আনব। মণিপুরে আমরা ইন্ডিয়া নামের নতুন অর্থ গড়ে তুলব।‘

এদিকে বিরোধীদের জোট  ‘ইন্ডিয়া’কে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে মন্তব্য করেন তার তীব্র নিন্দা করেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। এই প্রসঙ্গে তিনি টুইট করে এও জানান, বিরোধীদের জোটকে ভয় পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য। এরই পাশাপাশি তিনি মণিপুর ইস্যুতেও বিদ্ধ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। বলেন, মণিপুর ইস্যুতে বিবৃতি না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পালানোর চেষ্টা করছেন।

প্রসঙ্গত, বিরোধীদের জোট ‘ইন্ডিয়া’-কে নিয়ে এর আগেও কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। তবে মঙ্গলবার বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে যেভাবে ‘ইন্ডিয়া’-র সমালোচনা করেন তা এককথায় নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। মোদি এই প্রসঙ্গে জানান,  ‘ইন্ডিয়া’ নাম থাকলে দেশভক্ত হওয়া যায় না। এরপরেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহাদিন নামের সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটি রয়েছে। কিন্তু সংগঠনগুলির কাজই ছিল ইন্ডিয়ার বিরোধিতা করা। বিরোধীদের একই অবস্থা বলে বৈঠকে উপস্থিত সদস্যদের স্মরণও করিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়।

এবার এই ইস্যুতে নমোর সমালোচনা করতে ছাড়েলন না তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি স্পষ্টতই জানান, বিরোধীদের জোট ‘ইন্ডিয়া-কে ভয় পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বুঝতে পেরেছেন আগামী লোকসভা নির্বাচনে তাঁর পরাজয় সময়ের অপেক্ষা। আর তাতে আতঙ্কিত হয়ে জোট নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছেন বলে দাবি করেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। এর পাশাপাশি জোটকে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তুলনা করা লজ্জাজনক বলেও জানান এক টুইট বার্তায়। সঙ্গে টুইট বার্তায় এও বলেন, মণিপুর নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ‘ইন্ডিয়া’। বিবৃতি না দিয়ে যাতে পালিয়ে না যান, সে ব্যাপারে মোদিকে পরামর্শও দেন মহুয়া মৈত্র। তবে এটা স্পষ্ট যে, জোট ঘোষণা করার পর সংসদের বাদল অধিবেশনেও বিরোধীদের মধ্যে ফুটে উঠেছে ঐক্যবদ্ধ চেহারা। মণিপুর ইস্যুতে সংসদে আলোচনা এবং প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে সরব হন তাঁরা।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই বেঙ্গালুরুতে বসেছিল ২দিন ব্যাপী ২৬টি বিরোধী দলের বৈঠক। বৈঠকের শেষ দিন অর্থাৎ ১৮ জুলাই বিরোধী জোটকে নামকরণ করে ‘ইন্ডিয়া’ বলে ঘোষণা করা হয়। সেই সময় জোট নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদিকে। দুর্নীতিবাজ এবং পরিবারতন্ত্রের জোট বলেও কটাক্ষ করেন। সঙ্গে এও বলেন, এই জোটের লক্ষ্য মানুষের উন্নয়ন নয়, নিজেদের উন্নয়ন। যদিও সেই সময় মোদিকে পালটা কটাক্ষ করেছিলেন বিরোধীরাও। তবে, যেভাবে জোটকে জঙ্গি সংগঠনের তুলনা করলেন, তা নজিরবিহীন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + sixteen =