গোরুর দুধ অত্যন্ত উপকারী এক পানীয় এতে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ, এই পানীয়ে মজুত রয়েছে শরীরের প্রয়োজনীয় কিছু উপাদান। তাই গোরুর দুধকে সুষম পানীয় বলতেও পিছপা হন না বিশেষজ্ঞরা। তবে জানলে অবাক হয়ে যাবেন, এহেন উপকারী পানীয়ই কিন্তু অনেকের শরীরে গুরুতর কিছু সমস্যা তৈরি করে। তাই গোরুর দুধ খাওয়ার সময়ও সাবধান থাকা জরুরি। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের কথায়, গোরুর দুধে রয়েছে ক্যালশিয়াম, ফোলেট, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২, জিঙ্ক, আয়রন, সেলেনিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, নিয়াসিন, থিয়ামিন, রাইবোফ্ল্যাভিন, উপকারী ফ্যাট এবং অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। তাই গোরুর দুধকে সুষম পানীয় বলা হবে এটাই স্বাভাবিক।
তবে সব জিনিস সকলের সহ্য হয় না। ঠিক এই কথাটা গোরুর দুধের ক্ষেত্রেও খাটে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, হাতে গোনা কিছু ব্যক্তির শরীরে গোরুর দুধও একাধিক জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই এই অমৃত পানীয়ের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও সচেতন থাকা জরুরি। যেমন,
১. অ্যালার্জির ভ্রুকুটি
দুধে রয়েছে ল্যাকটোজ নামক একটি সুগার। আর এই সুগার কিন্তু সকলের শরীর সহ্য করতে পারে না। তাতেই অ্যালার্জি হতে পারেষ এক্ষেত্রে পেটে ব্যথা, গ্যাস, বমি বা ডায়ারিয়ার মতো উপসর্গও দেখা দিতে পারে। তাই মিল্ক অ্যালার্জি বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে, ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স নিয়ে সচেতন থাকতে হবে।
২. বোন ফ্র্যাকচারের আশঙ্কা
হাড়কে শক্তপোক্ত করার কাজে দুধের কোনও জুড়ি নেই। আসলে এই পানীয় উপস্থিত রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালশিয়াম যা হাড়ের জোর বাড়ায়। তবে জানলে অবাক হয়ে যাবেন, এহেন উপকারী পানীয় অত্যধিক পরিমাণে খাওয়ার কারণে কিন্তু বোন ফ্র্যাকচার বা হাড় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। হেলথলাইন থেকে জানা গেছে, দুধে উপস্থিত রয়েছে ডি গ্যালাকটোজ নামক এক ধরনের সুগার। আর এই উপাদানই হাড়কে ভঙ্গুর করে তুলতে পারে।
৩. পিছু নিতে পারে ক্যান্সার
নানা কারণে শেষ কয়েক দশকে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। আর এই সংখ্যা যে আগামীদিনে আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, এই নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করে রেখেছে বিশেষজ্ঞ সংস্থাগুলি। প্রসঙ্গত, কিছু গবেষণা থেকে জানা যায় যে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে দুধ পান করলেও কর্কটরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে দুধে উপস্থিত ক্যালশিয়ামের আধিক্যই প্রস্টেট ক্যানসারকে কাছে ডেকে আনতে পারে। এছাড়া এতে উপস্থিত সুগার যে ওভারিয়ান ক্যানসারের কারণ হতে পারে, তাও জানিয়ে রেখেছেন বিশেষজ্ঞরা।
৪. ফাঁদ পাতবে ব্রণ, একজিমা
অতিরিক্তি পরিমাণে দুধ পান করলে কিন্তু ব্রণর সমস্যা দেখা দিতে পারে। আসলে এটাও একধরনের ইনটলারেন্স থেকেই দুধ খেলে এই সমস্যা দেখা দেয়। তবে এক্ষেত্রে সমস্যাটা মূলত লো ফ্যাট স্কিম মিল্ক খেলেই প্রকট হয়।
এছাড়া ত্বকের মারাত্মক অসুখ একজিমার সমস্যাও গোরুর দুধ খেলে বাড়তে পারে বলে জানা যাচ্ছে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায়। এক্ষেত্রে খুব চুলকানি হয়। আর শরীরের যে কোনও জায়গাতেই এই সমস্যা দানা বাঁধতে পারে।