জি-২০ সম্মেলনে অতিথিদের জন্য স্পেশাল মেনু

শুরু হয়ে গিয়েছে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের চূড়ান্ত কাউন্টডাউন।ইতিমধ্যেই নয়া দিল্লিতে পা রাখা শুরু হচ্ছে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। জি২০ বৈঠক যেমন ভু-রাজনৈতিক তাৎপর্যের বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করার সুযোগ, তেমনই দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে সমগ্র বিশ্বের পরিচয় করিয়ে দেওয়ারও বড় প্ল্যাটফর্মও বটে। এদিকে যে কোনও সংস্কৃতির-ই অবিচ্ছেদ্য অংশ তাদের খাদ্যাভ্যাস।তাই জি২০ শীর্ষসম্মেলনে বড় গুরুত্ব পাচ্ছে খাদ্যতালিকাও। এদিকে সূত্রে খবর মিলছে, সোনার পরত দেওয়া রুপোর বাসনে পরিবেশন করা হবে বিদেশি অতিথিদের।তবে পরিবেশনের আগে, সব খাদ্য পরীক্ষা করা হবে পরীক্ষাগারে। কিন্তু, প্লেটে শেষ পর্যন্ত কী খাদ্য থাকবে সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কিছুই জানানো হয়নি। এদিকে সূত্রে এ খবর মিলছে, আগত প্রতিনিধিদের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে ডিম, মাছ বা মাংস থাকবে না। বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতা এবং প্রতিনিধিদের ভারতের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী নিরামিষ খাদ্যপদ পরিবেশন করা হবে। খাদ্যপদের মধ্য দিয়ে ভারতের বৈচিত্রপূর্ণ সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হবে। আর, নিরামিষ খাদ্য তালিকার প্রধান আকর্ষণ হতে চলেছে বাজরা থেকে তৈরি বিভিন্ন খাবার। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, ২০২৩ সালকে ভারত ‘ইয়ার অব মিলেটস’ বা ‘বাজরার বছর’ হিসাবে উদযাপন করছে। পুষ্টিগুণে ভরপুর খাদ্যশস্য হিসেবে গোটা বিশ্বে বাজরাকে জনপ্রিয় করে তুলতে, ২০২৩ সালকে ‘বাজরার বছর’ হিসেবে ঘোষণা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই অনুরোধ মেনেছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। তার প্রতিফলন থাকবে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের অতিথিদের খাদ্যতালিকাতেও।আর সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রীর এই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে বাজরার তৈরি খাদ্যপদকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, বাজরার তৈরি বিশেষ থালি, বাজরার পোলাও এবং বাজরার ইডলির মতো খাদ্যপদ পরিবেশন করা হবে অতিথিদের। স্টার্টার থেকে মেইন কোর্স পর্যন্ত, প্রতিটি ধাপে খাদ্যপদের প্রচুর বিকল্প থাকবে।

এই বৈচিত্র্যের শুরু একেবারে ‘ওয়েলকাম ড্রিঙ্কস’ থেকেই। বিভিন্ন হোটেলে বিদেশি অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য বিশেষ ওয়েলকাম ড্রিঙ্কসেও থাকবে ভারতীয়ত্বের ছোঁয়া। ভারতীয় কফি, চা, মিষ্টি, কেক, চকোলেট দিয়ে স্বাগত জানানো হবে তাঁদের। হোটেলগুলির খাদ্যপদেও ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় খাবার রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন শৈলির খাদ্যপদ থাকবে। হোটেলগুলির ব্রেকফাস্টেও বাজরার তৈরি খাবার থাকছে। সব মিলিয়ে, শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি ভারতের অনন্য রন্ধন ও খাদ্য সংস্কৃতির সঙ্গে বিদেশি অতিথিদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

সূত্রে এ খবরও মিলেছে, সরকারি নৈশভোজের পাশাপাশি নয়া দিল্লির জয়পুর হাউসে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে আগত অতিথদের জন্য এক বিশাল দ্বিপ্রাহরিক ভোজেরও আয়োজন করা হয়েছে। এই ভোজে রাষ্ট্রপ্রধানদের ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী নিরামিষ খাদ্যপদ পরিবেশন করা হবে। এই অনুষ্ঠানেও খাদ্যতালিকার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বাজরা।এরই পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় স্থান পেতে চলেছে রাজস্থানের ডাল-বাটি-চুর্মা, বাংলার রসগোল্লা, দক্ষিণ ভারতের বিশেষ মশলা ধোসা, বিহারের লিট্টি চোখা ইত্যাদি।

এছাড়াও থাকছে স্পেশাল স্ট্রিট ফুড। ভারতের স্ট্রিট ফুড সারা বিশ্বে জনপ্রিয়। সেই কথা মাথায় রেখে স্ট্রিট ফুডেরও বিশাল আয়োজন রাখা হচ্ছে জি২০ অতিথিদের জন্য। ফুচকা, চটপটি চাট, দই বড়া, সিঙারার মতো বিভিন্ন ভারতীয় স্ট্রিটফুডের স্বাদ নিতে পারবেন আগত প্রতিনিধিরা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − seven =