যৌন হেনস্থা থেকে জাতিবিদ্বেষ রুখতে পদক্ষেপ যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়াদের

যৌন হেনস্থা থেকে জাতিবিদ্বেষ, এমন নানা অভিযোগে বিদ্ধ হতে দেখা গেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে। তবে এমন পরিস্থিতি আর তৈরি করতে রাজি নন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাই। আর সেই কারণেই পড়ুয়াদের তরফ থেকে নেওয়া হচ্ছে নয়া পদক্ষেপ। তাঁদের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ভর্তির সময় ছাত্রছাত্রীদের থেকে যেন নির্যাতন ও হেনস্থা বিরোধী হলফনামা বা অ্যান্টি হ্যারাসমেন্ট ডিক্লিয়ারেশন নেওয়া হয়। পড়ুয়াদের এমন সিদ্ধান্তে নড়েচড়ে বসেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও। তাঁদের তরফ থেকেও এই প্রস্তাবে সম্মতি আছে বলেই শোনা যাচ্ছে। কারণ, তাঁরাও চান ক্যাম্পাসে এ ধরনের অভিযোগ কমে আসুক।

এই পদক্ষেপ নেওয়ার পিছনে কারণ হল,যাদবপুরে গত কিছুদিন ধরে একাধিক যৌন হেনস্থা এমনকী ধর্ষণের অভিযোগে এফআইআর পর্যন্ত হয়েছে। উঠেছে বিশেষ ভাবে সক্ষম পড়ুয়াদের উপর নির্যাতনের অভিযোগও। এরপরই কলা বিভাগের ছাত্রসংসদ আফসুর পক্ষ থেকে এক সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে সর্বসম্মত ভাবে পড়ুয়ারা অ্যান্টি হ্যারাসমেন্ট ডিক্লিয়ারেশনের প্রস্তাব গ্রহণ করেন। যদিও তাঁরা চাইছেন কেবল কলা বিভাগ নয়, গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি শাখার সব ছাত্রছাত্রীদেরই এর আওতায় আনা হোক। ভর্তির সময় যেন পড়ুয়ারা কোর্ট পেপারে লিখে জানায় যে, সে কখনও কোনও ধরনের নির্যাতন বা হেনস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকবে না। যদি এমন কোনও ঘটনা সে ঘটিয়ে ফেলে তাহলে আইনত তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ পড়ুয়ার মত, ‘যাদবপুর প্রগতিশীল ক্যাম্পাস বলে পরিচিত হলেও এই সমাজের থেকে বাইরে নয়। তাই অনেক খারাপ প্রভাব এখানেও এসে পড়ে।’ একইসঙ্গে এও জানান, ক্যাম্পাসে মহিলা, ছাত্রীদের উপর নির্যাতন, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের হেনস্থা এমনকী দলিত পড়ুয়াদের উপর নানা ধরনের নির্যাতনের ঘটনা সামনে আসছে। যাদবপুর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে না পারলেও রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এর মধ্যে আপত্তির কিছু দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা তো এখন ভর্তির সময় অ্যান্টি র‍্যাগিং ডিক্লিয়ারেশন নিই। তাতে কাজও হয়। পড়ুয়ারা যদি মনে করেন এতে ওঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে তাহলে আমি আপত্তির কিছু দেখছি না।’ এদিকে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ও এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এছাড়াও সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও পড়ুয়া থেকে কর্তৃপক্ষ সকলের পজিটিভ ভূমিকা নিতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + two =