রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের নজর এবার রাজ্যের মহিলা ভোটব্যাঙ্ক। এই ঘটনায় বিতর্কেও জড়িয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কারণ, তিনি মহিলাদের মাসিক তিন হাজার টাকা অনুদান পাওয়ার জন্য সরাসরি বিজেপির সদস্য হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন।
এদিকে বিজেপির একাংশের ব্যাখ্যা, আরজি করের ঘটনার পর মহিলাদের মধ্যে তৃণমূলের জনপ্রিয়তা কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। এই ‘ব্যাখ্যা’র কোনও বাস্তব ভিত্তি আছে কি না তা বুঝতেই বিজেপি দলের ‘সদস্য সংগ্রহ অভিযান’-এর বাংলার মহিলাদের মধ্যে বিজেপির সদস্য হওয়ার উৎসাহ কেমন, সেটাই বুঝতে চাইছে তারা। কারণ, তৃণমূলের মহিলা ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে না পারলে বাংলার মসনদ দখলের স্বপ্ন যে কোনও দিনই পূরণ হবে না, সেটা বিলক্ষণ বুঝে গিয়েছেন সুকান্ত মজুমদাররা।
প্রসঙ্গত, সোমবার কালনায় দলীয় কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। সেখানে তিনি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘পাড়ার লোকদের বলুন, বিজেপির সদস্য হওয়ার জন্য। সঙ্গে এও বলেন, যদি অন্নপূর্ণা যোজনার তিন হাজার টাকা পেতে চান, তা হলে বিজেপির সদস্যপদের ফর্ম পূরণ করুন।’ তাঁর এই মন্তব্য কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সুকান্তর মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘আমরা কিন্তু কখনও বলিনি যে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেতে হলে তৃণমূলের সদস্য হতে হবে। এটাই ফারাক।’
শুধু বাইরে নয়, বিজেপির অন্দরেও সুকান্তর মন্তব্যকে ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছে। দলের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘২০২৪–এর লোকসভা ভোটের আগেই আমরা বলেছিলাম, ২০২৬–এ বিজেপি বাংলার ক্ষমতা দখল করতে পারলে অন্নপূর্ণা যোজনা চালু করবে, যেখানে রাজ্যের প্রত্যেক মহিলাকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এর সঙ্গে বিজেপির সদস্য হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। সুকান্ত কেন এ কথা বললেন, বুঝতে পারছি না।’
বিতর্কেরও আবহেও পিছু হটছে না বিজেপি। আরজি করের ঘটনার পর দলে মহিলা সদস্যের সংখ্যা কেমন বাড়ছে, আপাতত সেটা গুনে দেখার কাজেই হাত দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার, শমীক ভট্টাচার্যরা। সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রতিটি জেলার নেতৃত্বর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, ‘সদস্য সংগ্রহ অভিযান’ কর্মসূচিতে এখনও পর্যন্ত কোন জেলায় কতজন মহিলা বিজেপির সদস্য হয়েছেন। একইসঙ্গে জেলার নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মহিলা সদস্য বাড়ানোর উপর জোর দেওয়ার জন্য।প্রয়োজনে দলের মহিলা বিধায়ক, পঞ্চায়েতের মহিলা সদস্যদের আরও সক্রিয় হতে বলা হয়েছে।