কোনও বিপর্যয় হয়নি জানালেন শুভেন্দু

শনিবার পশ্চিমবঙ্গের ৬টি বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে সবকটি আসনেই জয়ী হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তারপরেও ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি ভোটে জিতে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসবে বলে দাবি করতে দেখা গেল বঙ্গ বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে। প্রায় একই সুর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গলাতেও। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেতার বিষয়ে প্রত্যয়ী তিনি।

শনিবারের ফল প্রকাশের পর তিনি জানান, ‘কোনও বিপর্যয় হয়নি। বাংলাতে উপনির্বাচন হয় না। কিছুদিন আগে ধূপগুড়িতে আমাদের জেতা সিটে ৪ হাজার ভোটে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই ধূপগুড়ি থেকে আমাদের লোকসভার প্রার্থী জয়ন্ত রায় ২০ হাজার ভোটে জিতেছেন। মাদারিহাটে যখন আবার সাধারণ নির্বাচন হবে তখন বিজেপি প্রার্থী ৩০ থেকে ৪০ হাজার ভোটে জিতবেন। তাই এটা নিয়ে টক শো-তে আপনারা বলতে পারেন। কিন্তু, এটা নিয়ে আমরা ভাবিত নই।  শুক্রবারও আমি বলেছিলাম, পশ্চিমবঙ্গে উপনির্বাচনের ফল নিয়ে। এখানে উপনির্বাচনে ভোটই হয় না। মেদিনীপুরে পুলিশ আমাদের একটা পোলিং এজেন্ট-কেও বাড়িতে থাকতে দেয়নি। এমন ভাবে অত্যাচার করা হয়েছে যে তাঁদের বেঁচে আছি প্রমাণ করতে প্রেস কনফারেন্স করতে হয়েছে। এমনকী ভারতীয় জনতা পার্টির শক্তিকেন্দ্র প্রমুখের বাচ্চার জন্মদিনের অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল পর্যন্ত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন ২৬-এ হবে এবং মহারাষ্ট্রের মতোই নির্বাচন হবে। আমি বিরোধী দলনেতা, সংগঠনের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাই না। যুক্তও থাকি না। তবে আমি শুধু একটা জিনিস উপলব্ধির মধ্যে দিয়ে বলতে পারি যে নির্বাচনমুখী সংগঠন এবং আন্দোলনমুখী দল বা মোর্চা তৈরি করতে হবে। এটা আমাদের করা উচিত। কারণ আমাদের হাতে মাত্র একটি বছর আছে। ভোটাররা প্রস্তুত আছে এবং সবাই ২৬-এর জন্য অপেক্ষা করছে। এই ৬টা আসন নিয়ে কেউ ভাবেননি। আমি আপনাদের আগেই উদাহরণ দিলাম ধূপগুড়ির বিষয়ে। সেখানে এক বছর আগে বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণু রাইয়ের প্রয়াণের পর উপনির্বাচনে পিসি-ভাইপো পুলিশকে দিয়ে দখল করিয়ে অনেক মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে, অনেক ঢপবাজি করে জিতে ছিলেন। কিন্তু, যখন সাধারণ নির্বাচন হয়েছে তখন আমরা জিতেছি ২০ হাজার ভোটে। এই মাস ছয়েক আগে গত এপ্রিল-মে মাসে। মাদারিহাটের ক্ষেত্রেও প্রমাণ হয়ে যাবে যে আমরা ২৬-এ জিতব। শুধু মাদারিহাট নয়, নৈহাটি, তালডাংরা এবং মেদিনীপুর আসন ২৬ সালে ভারতীয় জনতা পার্টিই জিতবে। হাড়োয়া আমরা কোনওদিনই জিতিনি আর ভবিষ্যতেও জিতব না। ওখানে ৮০ শতাংশ মুসলমান রয়েছে। আর মুসলমানরা মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস আর বিরোধীদেরই ভোট দিয়েছে। ঝাড়খণ্ডেও তাই হয়েছে। সিতাই-তেও প্রায় ৪০ শতাংশের কাছাকাছি মুসলমান আছে। যদিও সিতাই-তে ২১ সালে ভালো ফাইট হয়েছিল। ২৬ সালে ওখানে আমাদের দল জিতবে কিনা জানি না। আর ওপারে মানে পূর্ব মেদিনীপুরে আমি ফাঁকা করে দিয়েছি। ২০২২ সালে কাঁথি পুরসভা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুণ্ডারা জোর করে দখল করেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা দাঁড়িয়ে আমাকে বলতেন আপনার এলাকায় আপনি তো হেরে গেছেন। সেই কাঁথিতে তো লোকসভা ভোটে কী হয়েছে তা মানুষ দেখেছেন। ২১টা ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯টি ওয়ার্ডে আমরা জিতেছি। ওখানে লোকসভায় ৫০ হাজার ভোটে আমি জিতিয়েছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − five =