উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি। দক্ষিণবঙ্গে বৃহস্পতিবারও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলবে। পয়লা জুলাই থেকে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি আরও বাড়বে এবং দক্ষিণবঙ্গে কমবে বৃষ্টির পরিমাণ, এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। বৃহস্পতিবার কলকাতায় মেঘলা আকাশ। বিক্ষিপ্তভাবে দু-এক পশলা বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে। ক্রমশ বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। শুক্রবার থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে। পয়লা জুলাই থেকে বাড়বে তাপমাত্রা। জলীয় বাষ্প থাকায় অস্বস্তি বাড়বে। কলকাতা শহরে বৃহস্পতিবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রি কম তাপমাত্রা। বুধবার বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৯২ থেকে ৯৭ শতাংশ। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা শহরে তাপমাত্রা থাকবে ২৬ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টি হয়েছে ১৫.২ মিলিমিটার।
এদিকে দক্ষিণবঙ্গে শুক্রবারও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বিক্ষিপ্ত ভাবে। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে সব জেলাতেই। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সতর্কতা দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। দক্ষিণবঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ছয় জেলাতে জারি হয়েছে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা-সহ উপকূল সংলগ্ন বাকি জেলাগুলিতে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আগামী ২৪ ঘণ্টায়। তবে শুক্রবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে, দক্ষিণবঙ্গে। এরপর শনিবার থেকে সোমবারের মধ্যে তাপমাত্রা বাড়বে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি হতে পারে এমনটাই মনে করছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। তাপমাত্রার সঙ্গে বাড়বে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি। একইসঙ্গে এও জানানো হয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় সারাদেশে বিরাজ করবে মৌসুমী বায়ু। কার্যত প্রায় শেষ পর্যায়ে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। মৌসুমী অক্ষরেখা বিকানেঢ, নারনাউল ও ফিরোজপুরের উপর অবস্থান করছে। আগামী দু’দিনে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু রাজস্থানের আরও কিছু অংশ এবং হরিয়ানা এবং পঞ্জাবের বাকি অংশে ঢুকে পড়বে।
এছাড়াও পূর্ব-পশ্চিম নিম্নচাপ অক্ষরেখা রয়েছে রাজস্থান থেকে বঙ্গোপসাগরের ওপর। এর ফলে সক্রিয় হবে মৌসুমী বায়ু। এই রেখা মধ্য প্রদেশের সুস্পষ্ট নিম্নচাপের উপর দিয়ে ঝাড়খণ্ড এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর অবস্থান করছে। শুক্রবার এই রেখা সরে গেলে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে।
এদিকে উত্তরবঙ্গে রয়েছে প্রবল বৃষ্টির সতর্কতা। আগামী দু’দিনে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জানানো হয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে। শুক্রবার বৃষ্টির পরিমাণ কমলেও শনিবার থেকে আবারও প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। সঙ্গে এও বলা হয়েছে কোচবিহার, জলপাইগু এবংড়ি আলিপুরদুয়ারে ৭০ থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে দার্জিলিং, কালিম্পং, মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। প্রবল বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকা দার্জিলিং ও কালিম্পং-এর বেশ কিছু এলাকায় ল্যান্ডস্লাইড বা ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে জলস্তর বাড়বে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকার মতো উত্তরবঙ্গের নদী গুলিতে। প্রবল বৃষ্টির কারণে দৃশ্যমানতা কমে যেতে পারে পার্বত্য এলাকায়। উত্তরবঙ্গের নিচু এলাকা প্লাবিত হতে পারে। নিচু এলাকার শস্য ও সবজি চাষের ক্ষতি হতে পারে।